হজরত ঈসা (আ.) ছিলেন আল্লাহর নবী। তিনি জন্মলাভ করেছিলেন অলৌকিকভাবে। দুনিয়ার প্রথম মানব হজরত আদম (আ.) ও প্রথম মানবী হজরত হাওয়ার জন্ম হয়েছিল কোনো পিতা-মাতা ছাড়াই। তারপর একমাত্র হজরত ঈসা (আ.)-এর জন্ম কোনো পিতৃ সম্পর্ক ছাড়াই। আল্লাহর কুদরতে পৈতৃক সম্পর্ক ছাড়াই কুমারী মায়ের গর্ভে তাঁর জন্ম হয়। হজরত ঈসা (আ.)-এর ওপর নাজিল হয় আসমানি কিতাব ইঞ্জিল শরিফ। হজরত ঈসা (আ.) আগের সব নবী ও আসমানি কিতাবের সত্যয়নকারী এবং সবশেষ নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আগমনের সুসংবাদ দানকারী। হজরত ঈসা (আ.) ছিলেন অন্যসব নবী-রসুলের মতোই পবিত্র পুরুষ। আল কোরআনে সূরা মারিয়ামে হজরত ঈসা (আ.)-এর জন্ম সম্পর্কে আলোক -পাত করা হয়েছে। বলা হয়েছে, আল্লাহ মারিয়ামের কাছে জিবরাইলকে পাঠান। মানুষের রূপ ধারণ করে তিনি তাঁর সামনে আত্মপ্রকাশ করেন। জিবরাইল (আ.) মারিয়ামকে বলেন, তোমাকে এক পবিত্র পুত্র দান করার জন্য আল্লাহ আমাকে পাঠিয়েছেন। মারিয়াম ফেরেশতাকে বলেন, কেমন করে আমার পুত্র হবে, আমাকে তো কোনো পুরুষ স্পর্শ করেনি। আমি ব্যভিচারিণীও নই। জিবরাইল (আ.) বলেন, আল্লাহর কাছে সবকিছুই সহজসাধ্য। কুমারী নারীর গর্ভে পুরুষের সংস্পর্শ ছাড়াই সন্তান জন্মদান মানুষের জন্য এক নিদর্শন। এটি আল্লাহ-প্রদত্ত অনুগ্রহ ও স্থিরীকৃত বিষয়। হজরত ঈসা (আ.) ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর মারিয়াম তাঁর সম্প্রদায়ের কাছে উপস্থিত হলেন। তারা কুমারীর মাতৃত্ব লাভকে সমালোচনার দৃষ্টিতে দেখল এবং বলল, তোমার পিতা-মাতা অসৎ কিংবা ব্যভিচারী ছিল না, তুমি এ কোন অদ্ভুত কাণ্ড ঘটালে? চারদিকের তীব্র বাক্যবাণে বিপর্যস্ত মারিয়াম তাঁর সম্প্রদায়ের লোকদের বললেন, তোমরা এই শিশুর কাছে জিজ্ঞাসা কর, কেন অদ্ভুত কাণ্ড ঘটল। শিশু হজরত ঈসা (আ.) মারিয়াম সম্প্রদায়ের সব জিজ্ঞাসার জবাব দেন। আল কোরআনে হজরত ঈসা (আ.)-এর অলৌকিকভাবে জন্ম সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘সন্তান গ্রহণ করা আল্লাহর কাজ নয়, তিনি পবিত্র মহিমাময়। তিনি যখন কিছু স্থির করেন তখন বলেন, “হও” এবং তা হয়ে যায়।’ সূরা মারিয়াম, আয়াত ৩৫। পুণ্যবতী নারী কুমারী মারিয়ামের গর্ভে পুরুষের সংস্পর্শ ছাড়াই হজরত ঈসা (আ.)-এর জন্ম প্রাকৃতিক নিয়মে অসম্ভব হলেও আল্লাহর কুদরতের কাছে কোনো কিছুই অসম্ভব নয়।
লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক