বুধবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

নামাজ আদায়কারীদের সুরক্ষা দেন আল্লাহ

মাওলানা মুহাম্মদ জিয়াউদ্দিন

ইসলামী পরিভাষায় শরিয়তের নিয়ম মোতাবেক এক বিশেষ পদ্ধতিতে আল্লাহর গুণগান করা, রুকু সিজদাসহ আল্লাহর ইবাদত করাকে নামাজ বলে। নামাজ একটি ফরজ ইবাদত। বান্দার জন্য তা অবশ্য পালনীয়। শুদ্ধভাবে যারা নামাজ আদায় করেন, আল্লাহ তাদের জীবনের সর্বক্ষেত্রে সুরক্ষা দেন।

পবিত্র কোরআনুল কারিমে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আপনি আপনার পরিবারের লোকদের নামাজের আদেশ দিন এবং নিজেও এর ওপর অবিচল থাকুন। আমি আপনার কাছে কোনো জীবনোপকরণ চাই না; আমিই আপনাকে জীবনোপকরণ দিই আর আল্লাহভীরুতার পরিণাম শুভ।’ (সূরা ত্বাহা-১৩২)। অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘অতএব তারা যেন এই ঘরের (বাইতুল্লাহ) পালনকর্তার উপাসনা করে। যিনি তাদের ক্ষুধায় আহার দিয়েছেন এবং ভীতি থেকে তাদের নিরাপত্তা দান করেছেন।’ (সূরা কুরাইশ ৩-৪)। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আল্লাহতায়ালা বলেন, হে আদম সন্তান! তুমি নিজেকে আমার ইবাদতের জন্য মুক্ত করে দাও, আমি তোমার বক্ষকে ঐশ্বর্য ও অভাবহীনতা দ্বারা পূর্ণ করে দেব। তোমার দারিদ্র্য ও অভাব দূর করে দেব। আর যদি তা না কর, তবে আমি তোমার অন্তরকে ব্যস্ততা দ্বারা পূর্ণ করব এবং তোমার দারিদ্র্য দূর করব না। (তিরমিজি, ইবনে কাসির)।

ওবাদা ইবনে সামেত (রা.) বর্ণনা করেন, রসুল (সা.) বলেছেন : ‘যে লোক নিখুঁতভাবে অজু করে নামাজে দাঁড়ায়, রুকু সেজদা সঠিকভাবে আদায় করে এবং কেরাত বিশুদ্ধভাবে পাঠ করে নামাজ শেষ করে, নামাজ তাকে বলে : তুমি আমাকে হেফাজত করেছ, আল্লাহপাকও তেমনিভাবে তোমাকে রক্ষা করুন। অতঃপর ওই নামাজ আলোর আভা ছড়াতে ছড়াতে ঊর্ধ্বপানে উঠতে থাকে। তার জন্য আসমানের দরজাগুলো খুলে যায়। অতঃপর তা আল্লাহর সমীপে পৌঁছে সেই নামাজির জন্য সুপারিশ করে। আর যদি (এর বিপরীত) রুকু-সেজদা ও কেরাত সঠিক ও বিশুদ্ধভাবে সম্পন্ন না করে, তবে নামাজ তাকে বলে : তুমি যেমন আমাকে বিনষ্ট করলে, অনুরূপ আল্লাহপাকও তোমাকে ধ্বংস করুন। অনন্তর তা অন্ধকারে আচ্ছন্ন অবস্থায় ঊর্ধ্বপানে উঠতে থাকে। তার জন্য আসমানের দুয়ারগুলো বন্ধ হয়ে যায় এবং ওই নামাজকে পুরনো কাপড়ের মতো গুটিয়ে নামাজির মুখে ছুড়ে মারা হয়।’ -বায়হাকি

হজরত সালমান ফারেসি (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল (সা.) ঘোষণা করেন : ‘নামাজ যেন একটি দাঁড়িপাল্লা। যে লোক এ দাঁড়িপাল্লা পরিপূর্ণ করে মেপে দেবে, সে পুরস্কারও পরিপূর্ণরূপে লাভ করবে। আর যে কম করবে তবে তো জানাই আছে, আল্লাহপাক ওজনে কমকারীদের ব্যাপারে কী ঘোষণা দিয়েছেন। আল্লাহ পাক বলেন : ‘যারা মাপে কম করে, তাদের জন্য জাহান্নামের ‘ওয়ায়ল’ নামক কূপ নির্ধারিত।’ বস্তু বা জমির পরিমাপে কম করা হতে পারে, তেমনি নামাজেও কম করা হতে পারে। আল্লাহপাক তাদের জাহান্নামের ওয়ায়ল নামক কূপের কঠোর শাস্তি দেওয়ার সাবধান বাণী ঘোষণা করেছেন। ওয়ায়ল হলো জাহান্নামের তলদেশে এমন প্রখর তাপযুক্ত একটি কূপ, যার ভয়ঙ্কর উত্তাপ থেকে স্বয়ং জাহান্নামই আল্লাহর দরবারে পরিত্রাণ কামনা করে। -মুসনাদে  আহমদ।

                লেখক : ইসলামী গবেষক।

 

সর্বশেষ খবর