বিশ্ববাজারে গম ও চিনি বাদে বেশির ভাগ খাদ্যপণ্যের দাম কমেছে। বাংলাদেশ খাদ্যপণ্যের ক্ষেত্রে অনেকাংশেই আমদানিনির্ভর। বিশেষ করে ভোজ্যতেল, দুগ্ধপণ্য, গম, চিনি, ডাল ইত্যাদি নিত্যপণ্যের বড় অংশ আসে বিদেশ থেকে। স্বভাবতই বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্যের দাম বাড়লে তার অনিবার্য প্রভাব পড়ে বাংলাদেশের বাজারে। ভোক্তাদের নিত্যপণ্য কিনতে বাড়তি অর্থ ব্যয় করতে হয়। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্যানুযায়ী ভোজ্যতেল, দুগ্ধপণ্য ও খাদ্যশস্যের দাম হ্রাস পাওয়ায় সার্বিক খাদ্যপণ্যের বাজার নিম্নমুখী। গত নভেম্বরে সংস্থার খাদ্যসূচক কমে হয় ১৬০.৮ পয়েন্ট; যা ২০১৬ সালের মে মাসের পর থেকে সর্বনিম্ন। গত অক্টোবরে খাদ্যসূচক ছিল ১৬২.৯ পয়েন্ট। ওই মাসেও বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্যের দাম কমেছে। নভেম্বরে ভোজ্যতেলের দাম আগের মাসের চেয়ে কমেছে ৫.৭ শতাংশ। এতে টানা ১০ মাস ভোজ্যতেলের দাম হ্রাস পেয়ে ১২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে নেমেছে। দুগ্ধপণ্যের দাম কমেছে ৩.৩ শতাংশ। এ দর এক বছর আগের একই সময়ের তুলনায় ১৩.৯ শতাংশ কম। তবে আগের মাসের তুলনায় চিনির দাম বেড়েছে ৪.৪ শতাংশ। টানা তিন মাস দাম বাড়ার বড় কারণ বিশ্বের বৃহত্তম চিনি উৎপাদনকারী দেশ ব্রাজিলে উৎপাদন হ্রাস। বিশ্ববাজারে সাম্প্রতিক সময়ে বেড়েছে গমের দাম। বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় অস্ট্রেলিয়া, কানাডাসহ কয়েকটি দেশের গম সরবরাহ হ্রাস পেয়েছে। ২০১৮-১৯ বর্ষে বিশ্বে গম উৎপাদন হবে ৭২৫.১ মিলিয়ন টন, যা গত বছরের চেয়ে ৪.৩ শতাংশ কম। বিশ্ববাজারে গম ও চিনির দাম বাড়ায় দেশের বাজারে গম বা আটার দাম আপাতত স্থিতিশীল থাকলেও চিনির দাম বেড়েছে। তবে বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেল, দুগ্ধপণ্যের দাম কমা সত্ত্বেও বাজারে তার প্রতিক্রিয়া নেই। দেশের প্রধান খাদ্যপণ্য চালের বাজার চলতি বছর স্থিতিশীল থাকবে দেশে আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করায়। কোনো কারণে চাল আমদানির প্রয়োজন হলে বিশ্ববাজারে দাম কম থাকায় ভোক্তাদের জন্য তা সমস্যা সৃষ্টি করবে না। তবে কৃষকের স্বার্থে চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করার পথ বেছে নেওয়াই হবে শ্রেয়।