শুক্রবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

রিজিকপ্রাপ্তির মাধ্যম নামাজ

যুবায়ের আহমাদ

রিজিকপ্রাপ্তির মাধ্যম নামাজ

রিজিকের চিন্তায় মানুষের বিবেক-বুদ্ধি থাকে সদা ব্যস্ত। মানুষসহ সৃষ্টিকুলের রিজিকের দায়িত্ব আল্লাহতায়ালা নিজ হাতেই গ্রহণ করেছেন। করেছেন মানুষ চাওয়ার আগেই তার সব চাহিদা পূরণের ব্যবস্থা। শস্য, ফলমূল আর বৃক্ষলতা তারই করুণার সাক্ষী। আকাশ থেকে রহমতের বৃষ্টির অঝর ধারায় তিনিই সিক্ত করেন সৃষ্টিকুলকে। বৃক্ষরাজির অক্সিজেন দিয়ে পরিবেশকে পরিশুদ্ধ করেন; রাখেন বসবাসের উপযোগী করে। পবিত্র কোরআনুল কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর পৃথিবীতে কোনো বিচরণশীল নেই, যার রিজিকের ব্যবস্থা আল্লাহ করে রাখেননি।’ (সূরা হুদ : ৬)।  মহান আল্লাহতায়ালা মায়ের গর্ভের সুরক্ষিত স্থানেও মানবশিশুর জীবিকার ব্যবস্থা করেছেন। নবজাতকের

জম্মে র পর মায়ের দুধের মাধ্যমে তার খাবার ও ওষুধের ব্যবস্থা করেছেন মহান আল্লাহতায়ালা। জমিনে আমরা ধানের চারা রোপণ করি, আল্লাহ সেই চারায় সোনালি ধান দিয়ে পূর্ণ করে দেন। রিজিকের মৌলিক চাহিদা পূরণে আমরা বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করি। বেছে নিই বিভিন্ন পেশা। অলস বসে না থেকে বিভিন্ন পেশায় জড়িয়ে পড়া আল্লাহরই হুকুম। তবে আল্লাহতায়ালার নির্দেশ হলো আগে নামাজ আদায় করে তারপর রিজিকের সন্ধানে জমিনে, অফিসে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কিংবা কর্মক্ষেত্রে ছড়িয়ে পড়া। কোরআনুল কারিম ও হাদিস শরিফে জীবিকার অভাব মোচনে যেসব আমলের কথা বলা হয়েছে এর অন্যতম হলো নামাজ। পবিত্র কোরআনুল কারিমে আল্লাহতায়ালা নামাজ আদায়কারী ও জাকাত প্রদানকারীদের জন্য সম্মানজনক রিজিকের ঘোষণা করেছেন। আল্লাহ প্রদত্ত মর্যাদা, ক্ষমা দিয়েও তাদের ধন্য করবেন। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘যারা নামাজ প্রতিষ্ঠা করে এবং আমি তাদের যে রিজিক দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করে তারাই হলো সত্যিকারের মুমিন (ইমানদার)। তাদের জন্য রয়েছে তাদের প্রতিপালকের কাছে মর্যাদা, ক্ষমা এবং জীবিকা।’ (সুরা আনফাল : ৩-৪)। পবিত্র কোরআনুল কারিমে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আপনি আপনার পরিবারের লোকদের নামাজের আদেশ দিন এবং নিজেও এর ওপর অবিচল থাকুন। আমি আপনার কাছে কোনো রিজিক চাই না; আমিই আপনাকে রিজিক দেই আর আল্লাহভীরুতার পরিণাম শুভ।’ (সুরা ত্বহা : ১৩২ )। অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘অতএব তারা যেন এই ঘরের (বাইতুল্লাহ) পালনকর্তার উপাসনা করে। যিনি তাদের ক্ষুধায় আহার দিয়েছেন এবং ভীতি থেকে তাদের নিরাপত্তা দান করেছেন।’ (সূরা কুরাইশ : ৩-৪)। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আল্লাহতায়ালা বলেন, হে আদম সন্তান! তুমি নিজেকে আমার ইবাদতের জন্য মুক্ত করে দাও, আমি তোমার বক্ষকে ঐশ্বর্য ও অভাবহীনতা দ্বারা পূর্ণ করে দেব। তোমার দারিদ্র্য ও অভাব দূর করে দেব। আর যদি তা না কর তবে আমি তোমার অন্তরকে ব্যস্ততা দ্বারা পূর্ণ করব এবং তোমার দারিদ্র্য দূর করব না। (তিরমিজি, ইবনে কাসির)।

লেখক : জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত কারি ও খতিব, বাইতুশ শফীক মসজিদ, বোর্ড বাজার, গাজীপুর।

সর্বশেষ খবর