রবিবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

পানি পানের আদব ও উপকারিতা

মুফতি আমজাদ হোসাইন হেলালী

পানি পানের আদব ও উপকারিতা

পানি মহান রব্বুল আলামিনের অনেক বড় নিয়ামত। পানি সম্পর্কে বলা হয়, ‘পানির অপর নাম জীবন’। এ নিয়ামত পান করার কিছু নিয়মপদ্ধতি রয়েছে। ওই নিয়ম পদ্ধতি রক্ষা করে পান করলে পানি পান করাও হলো, আবার সুন্নতে রসুলের ওপর আমলও হলো। শুধু মুসলিম শরিফেই প্রায় ছয়টি হাদিস এসেছে পানি পানের নিয়মপদ্ধতি সম্পর্কে। হাদিসে এসেছে এক. ডান হাত দ্বারা পান করা, বাম হাত দ্বারা পান না করা। কেননা শয়তান বাম হাত দিয়ে পানি পান করে। দুই. বসে বসে পান করা, দাঁড়িয়ে পান না করা। তিন. পানি পানের শুরুতে বিসমিল্লাহ পড়া এবং শেষে আলহামদু লিল্লাহ পড়া। চার. তিন নিঃশ্বাসে পানি পান করা, নিঃশ্বাস ফেলার সময় গ্লাস থেকে মুখ আলাদা করা। গ্লাস যদি ভাঙা থাকে গ্লাসের ভাঙা অংশের দিক দিয়ে পান না করা । পাঁচ. জগ ইত্যাদি বড় পাত্রে মুখ লাগিয়ে পান না করা। কেননা এতে বেশি পানি চলে আসার বা সাপ-বিচ্ছু থাকার সম্ভাবনা থাকে। ছয়. সোনা জাতীয় পাত্রে পান না করা। পানি পান করার পর অন্যজনকে দিতে হলে প্রথমে ডান পাশের জনকে দেবেন। সেও তার ডান পাশের জনকে দেবে, এভাবেই চলবে। চা ও অন্যান্য পানীয় এ নিয়মেই পান করতে হবে। উল্লিখিত নিয়মে পানি পান করার দ্বারা অনেক শারীরিক উপকারও আছে। ইসলামের প্রতিটি বিধান কত সুন্দর! পানি পানের এই সুন্দরতম বিধানটির ওপর যদি মানুষ ছোটকাল থেকে অভ্যাস করে যেভাবে পানি পানের নির্দেশনা রয়েছে, তাহলে তার শারীরিক-মানসিক সব ক্ষেত্রেই শান্তি-প্রশান্তি আসবে ইনশা আল্লাহ।  নিজেসহ পরিবারের ছোটবড় সবাইকে এভাবে পানি পান করার অভ্যাস করানো একজন বিচক্ষণ ও বুদ্ধিমান অভিভাবকের কাজ। বিজ্ঞ মনীষীরা বলেন, দাঁড়িয়ে পানি পান করা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। খুব তৃষ্ণার সময় এক শ্বাসে অনেক পানি পান করা আরও বেশি ক্ষতিকর।

পানি পানের যত থিউরি আছে সব থিউরি রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশিত পদ্ধতিকে অনেক সুন্দর, বাস্তব ও স্বাস্থ্যসম্মত বলে সাব্যস্ত করেছে, যে পদ্ধতিটি আজ থেকে প্রায় দেড় হাজার বছর আগে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিক্ষা দিয়ে গেছেন। বিজ্ঞান যার সৌন্দর্য ও শ্রেষ্ঠত্ব দিনে দিনে আরও বেশি করে বুঝতে পেরেছে। মানুষ যখন প্রথম এক ঢোক পানি পান করে, এরপর নিঃশ্বাস নেয় তখন পানির পরপরই তার দেহে এক ধরনের অক্সিজেন প্রবেশ করে। এরপর তিনবার যখন সে এ কাজটি করে তখন তার মস্তিষ্কে ও রক্তের শিরা-উপশিরা যথেষ্ট অক্সিজেন লাভ করে, ফুসফুস আরাম পায়, খাদ্য ও শ্বাসনালি নিজেদের সেরা পারফর্ম করে, পাকস্থলী ধীরে ধীরে সে পানিগুলো রিসিভ করে। বিভিন্ন নালি ও শিরা পানিটাকে ফিল্টারিং করে, পানিতে কোনো জীবাণু বা ময়লা থাকলে উপকারী জীবাণুরা সেগুলোকে ধ্বংস করে দেয়।

লেখক : মুহাদ্দিস, মুফাসসির খতিব ও টিভি উপস্থাপক।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর