সোমবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
ভেষজ

গমের গুণাগুণ

গমের গুণাগুণ

গমের ওপরের লাল খোসায় পৌষ্টিক তত্ত্ব বেশি থাকে। চাল বা অন্যান্য খাদ্যের চেয়ে গমের পুষ্টিগুণ বেশি ও  শরীরের জন্য উপকারী। অঙ্কুরের সঙ্গে প্রোটিন আর খোসার সঙ্গে (ভুসির সঙ্গে) নষ্ট হয়ে যায় ভিটামিন ও শরীরের পক্ষে উপকারী তত্ত্ব। আজকাল জাঁতায় পেষা আটা গ্রামেও পাওয়া যায় না। মেশিনে পেষা আটা বেশি গরমের কারণে সত্ত্বহীন হয়ে পড়ে। জাঁতার পেষা লাল মোটা আটার রুটি ও লাপসি (আটা ও দুধ দিয়ে তৈরি হালুয়ার মতো খাবার) বাজারের কেক, বিস্কুট, পাউরুটির চেয়ে খাদ্য হিসেবে অনেক ভালো ও উপকারী। লাল আটা কোষ্ঠ শুদ্ধি করে। কোনো কোনো চিকিৎসকের মতে সাদা মিহি ময়দায় এক ভাগ মাত্র পুষ্টিকর উপাদান থাকে। মোটা আটায় থাকে তিন থেকে চার ভাগ এবং বেশি মোটা আটায় পাঁচ ভাগ, গমের ভুসিতে সাত ভাগ। গমের আটা দিয়ে তৈরি হয় রুটি, পরোটা। ময়দা দিয়ে লুচি, কচুরি। গম ভাঙিয়ে তৈরি করা হয় সুজি, দালিয়া। পাউরুটি, কেক, বিস্কুট সবকিছুরই প্রধান উপাদান ময়দা। রুটি তৈরির জন্য আটা কয়েক ঘণ্টা আগেই ভালো করে পানি দিয়ে ঠেসে মেখে রাখা উচিত। এভাবে আটা আগে মেখে রাখলে এর ভিতরের বিবিধ এনজাইমের (জীর্ণক) পরিপাকক্রিয়া আগেই শুরু হয় এবং খেতে বেশি ভালো লাগে। আটা আগে থেকে নুন দিয়ে না মাখা ভালো। আগে থেকে নুন দিয়ে মাখলে রুটির মিষ্টতা কমে যায় অর্থাৎ রুটি খেতে আর মিষ্টি লাগে না। আটার মোটা রুটির তত্ত্বগুণ : গুরুপাক (সহজে হজম হয় না), পুষ্টিকর ও শরীরের বল বৃদ্ধি করে, ধাতু ও কফ বৃদ্ধি এবং বায়ু নাশ করে। আটার পাতলা রুটির তত্ত্বগুণ : লঘুপাক (সহজে হজম হয়); মল রোধ; বল, পুষ্টি ও শুক্র বৃদ্ধি এবং কফ, বাত, পিত্ত অর্থাৎ ত্রিদোষ নাশ করে। লাল আটার রুটি (ভুসিসুদ্ধ) : লাল আটার পাতলা ও মোটা রুটির সব গুণই আছে এবং তার সঙ্গে আর একটি বিশেষ গুণ এ রুটি খেলে কোষ্ঠ পরিষ্কার হয়।

সুজি বা ময়দার রুটি : সুজি বা ময়দা পানিতে মেখে কিছুক্ষণ রেখে অল্প সিদ্ধ করে রুটি তৈরি করলে বেশি পুষ্টিকর হয়, সহজে হজম হয় এবং এ রুটি খেলে অম্বল হয় না। যারা অসুখে ভুগছেন, শরীর দুর্বল তাদের পক্ষে এ রুটি খাওয়া ভালো। যাদের শরীর সুস্থ তারা অবশ্য জাঁতা বা হাতকলে ভাঙা লাল আটার রুটি খেলেই বেশি উপকার পাবেন। এ রুটির খাদ্যগুণ সবচেয়ে বেশি।

লুচি : ময়দায় ঘিয়ের ময়ান দিয়ে ঘিয়ে ভেজে তৈরি করা হয় লুচি। খাদ্য হিসেবে লুচি গুরুপাক, স্নিগ্ধ, ধাতুবর্ধক, বাত ও পিত্তনাশক। সব সময় গরম-টাটকা লুচি খাওয়া উচিত। কারণ অনেকের মতে ঠাণ্ডা বা বাসি লুচি দুষ্পাচ্য।

আরিফুজ্জামান বাবলু।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর