একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের বিজয়কে ম্লান করার বেশকিছু ঘটনা ঘটেছে ইতিমধ্যে। এর মধ্যে দেশের একাধিক স্থানে প্রতিপক্ষ দলের সমর্থকদের বাড়িঘরে বিজয়ী দলের সমর্থকদের হামলা, নোয়াখালীর সুবর্ণচরে স্থানীয় প্রভাবশালীদের নির্দেশনা না মেনে বিরোধীদলীয় প্রার্থীকে ভোট দেওয়ায় স্বামী ও সন্তানকে বেঁধে গণধর্ষণ এবং খুলনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এক সাংবাদিককে গ্রেফতার করে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার ঘটনা সারা দেশে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। মনে হচ্ছে নির্বাচনে সরকারি দলের বিশাল বিজয়কে ম্লান করতে অতি উৎসাহীরা উঠেপড়ে লেগেছে। নির্বাচনে ভোটাররা কাকে ভোট দেবে এটি তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। এ অধিকার প্রয়োগের কারণে কারোর বাড়িঘরে হামলা হবে কিংবা কেউ ধর্ষিতা হবে এটি সভ্য সমাজে কল্পনা করা কঠিন। একইভাবে কোনো সংবাদের জন্য সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের হাতে হাতকড়া পরানো বা তাকে রিমান্ডে নেওয়া গণতান্ত্রিক সমাজে প্রত্যাশিত নয়। স্বীকার করতেই হবে, সাংবাদিকরা ভুলত্রুটির ঊর্ধ্বে নন। ফলে কোনো সংবাদের জন্য গ্রেফতার কিংবা রিমান্ডে নেওয়ার বদলে ভুল সংশোধন বা এ ব্যাপারে ব্যাখ্যা দেওয়ার সুযোগ থাকা উচিত। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাসের সময় সরকারের শীর্ষ কর্তৃপক্ষের আশ্বাস ছিল এটি সাংবাদিকদের হয়রানির হাতিয়ার হবে না। কোনো অতি উৎসাহী সরকারি কর্মকর্তা সাংবাদিকদের হাতে হাতকড়া পরানোকে নিজের কৃতিত্ব বলে ভাবলেও ভাবতে পারেন। তবে এ কাণ্ডজ্ঞানহীনতার দায়দায়িত্ব সরকারের সুনাম ক্ষুণ্নের কারণ ঘটাচ্ছে কিনা গভীরভাবে ভাবতে হবে। নির্বাচনে সরকারি দল যে বড় জয় পেয়েছে, তাতে তাদের দায়বোধের পরিধিও বাড়িয়ে দিয়েছে। এ জয় তাদের আরও বিনীত করবে, সহনশীল হতে উদ্বুদ্ধ করবে দেশবাসী তেমনটিই দেখতে চায়। তার বদলে যারা বিজয়কে ম্লান করতে অপকর্মের দিকে হাত বাড়াচ্ছে তাদের এখনই সামাল দেওয়া উচিত। নিজেদের স্বার্থেই এ ব্যাপারে সরকার ও সরকারি দলের বিজ্ঞ নেতাদের কঠোর হতে হবে।