বেতন নেন, সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেন কিন্তু হাসপাতালে ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করেন না ডাক্তাররা। সবার ক্ষেত্রে এটি সত্যি না হলেও বাংলাদেশের সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোয় চলছে এমনই যাচ্ছেতাই অবস্থা। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডাক্তাররা সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা না দিয়ে বাইরে প্রাইভেট প্র্যাকটিসে ব্যস্ত। ফলে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগীরা হয়রানির শিকার ও স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার দুদক আট জেলায় অভিযান চালায়। এ সময় ঢাকার হাসপাতালে নিয়োজিত থাকা মোট চিকিৎসকের ১০ ভাগই ছিলেন অনুপস্থিত। আর ঢাকার বাইরে ৬১ শতাংশের বেশি। সকাল ৯টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত একযোগে আট জেলার ১১টি সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রে অভিযান চালায় দুদকের অ্যানফোর্সমেন্ট টিম। এর মধ্যে রাজধানীর তিনটি, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, রংপুর, রাজশাহী, দিনাজপুর, কুষ্টিয়ার একটি করে এবং পাবনার দুটি হাসপাতাল রয়েছে। অভিযান শেষে বলা হয়, ঢাকার বাইরে সাতটি হাসপাতালে চিকিৎসকের অনুপস্থিতির হার প্রায় ৬১.৮ শতাংশ। তবে একমাত্র রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতালে সব চিকিৎসককেই উপস্থিত পাওয়া যায়। কিন্তু সেখানেও ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে এক কর্মীকে বরখাস্ত করা হয়েছে। চিকিৎসা একটি মানবিক পেশা। দুনিয়ার সবচেয়ে মহত্তম পেশাগুলোরও একটি। বাংলাদেশের স্বাধিকার ও স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম লক্ষ্য ছিল দেশের মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা। চিকিৎসা যেহেতু মানুষের মৌলিক অধিকারের অন্যতম, সেহেতু শত সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও চিকিৎসা খাতে প্রতিটি সরকার বাজেটের এক বড় অংশ ব্যয় করেছে। কিন্তু সে সুফল গণমানুষের কল্যাণে শতভাগ ব্যবহৃত হয়নি চিকিৎসকদের একাংশের অকৃতজ্ঞ মনোভাবের কারণে। চিকিৎসা শিক্ষায় রাষ্ট্র বিপুল অর্থ ব্যয় করলেও বেতন-ভাতা নিয়েও জনগণের সেবায় নিবেদিত না হওয়া দুর্ভাগ্যজনক। এ অন্যায়ের অবসান হওয়া উচিত।