শিরোনাম
সোমবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

ব্যাংক ঋণ লোপাট

সহযোগীদেরও পাকড়াও করুন

একই জমি বা ফ্ল্যাটের দলিল জামানত রেখে একাধিক ব্যাংক থেকে সাড়ে তিনশ কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়েছে এক মহাপ্রতারক। মুজিবর রহমান শামিম নামের এ প্রতারক এক সময় ছিলেন ছোটখাটো স্টেশনারি সাপ্লাই ব্যবসায়ী। ব্যাংক ঋণ লোপাট করে কয়েকশ কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়ার কৃতিত্বও দেখিয়েছেন। তিনি সবচেয়ে বেশি ঋণ নিয়েছেন বেসরকারি একটি ব্যাংকের রাজধানীর নবাবপুর শাখা থেকে- প্রায় ১৯২ কোটি টাকা। জয় পেট্রোলিয়াম, জয় এন্টারপ্রাইজ, জয় ফিড মিল, জয় জুট প্রসেসিং এই চারটি কোম্পানির বিপরীতে নেওয়া হয়েছে ওই ঋণ। প্রথম সারির ওই ব্যাংকটির ঋণগ্রহীতা জয় এন্টারপ্রাইজ জনতা ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে হয়ে গেছে নিউ জয় এন্টারপ্রাইজ। এ নিউ জয় এন্টারপ্রাইজের বিপরীতে জনতা ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া হয়েছে ৪০ কোটি টাকা। ট্রাস্ট ব্যাংক খুলনা শাখায় রয়েছে দুটি কোম্পানির নামে ঋণ। সাউথ হ্যাচারি ও এগ্রো এবং জয় শিপিং নামের কোম্পানির বিপরীতে ঋণ নেওয়া হয়েছে ২৩ কোটি টাকা। সাবেক ফারমার্স তথা বর্তমান পদ্মা ব্যাংক খুলনা শাখা থেকে ২৫ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে। ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রতারককুলের এ শিরোমণি ঢাকা ও খুলনার চারটি ঠিকানা ব্যবহার করেছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘ঋণের প্রধান শর্ত সম্পত্তি বন্ধক। যার ওপর ভিত্তি করে ব্যাংক ঋণ দেয়। এ ক্ষেত্রে অনিয়মের কোনো সুযোগ নেই। একই সম্পত্তি একাধিক ব্যাংকের ঋণের ক্ষেত্রে বন্ধক দেখানো কোনোভাবেই সম্ভব নয়। বন্ধক থাকা জমিতে ব্যাংকের সাইনবোর্ড থাকাও জরুরি। এর অন্যথা হলে বুঝতে হবে ঋণ লোপাটের ঘটনায় শুধু গ্রাহক নয়, ব্যাংকের কর্মকর্তারাও জড়িত। খেলাপি ঋণ বাড়ার একটি অন্যতম কারণ বন্ধক সঠিকভাবে না থাকা। ঋণের বিপরীতে বন্ধকের বিষয়টি দেখার দায়িত্ব ব্যাংক কর্মকর্তাদের। কোনো ব্যাংকে বন্ধক রাখার পর আবার কেউ একই জমি বা সম্পদ অন্য ব্যাংকের ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে দেখালে বুঝতে হবে সবার যোগসাজশে সংঘটিত হয়েছে এ অপকর্ম। তাদের সবাইকে কঠোরভাবে আইনের আওতায় আনতে হবে। সাড়ে তিনশ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ লোপাটে ব্যাংক কর্মকর্তারা সহযোগীর ভূমিকা পালন করেছেন।  তাদের আইনের আওতায় এনে ব্যাংক তথা আমানতকারীদের লোপাট হয়ে যাওয়া অর্থ উদ্ধারের উদ্যোগ নিতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর