শুক্রবার, ৩০ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

বিনিয়োগে বিসংবাদ

কর্মসংস্থানের সুযোগ সংকুচিত হচ্ছে

দেশে বিদেশি বিনিয়োগে বড় ধরনের ছন্দপতন ঘটেছে বিদায়ী অর্থবছরে। একই সময়ে দেশি বিনিয়োগও আগের বছরের চেয়ে কমেছে। বিনিয়োগের সঙ্গে কর্মসংস্থানের সম্পর্ক ওতপ্রোত জড়িত। বলা যায়, হাত ধরাধরি করে এগোয় এ বিষয় দুটি। সে বিবেচনায় বিনিয়োগ হ্রাস পাওয়া মানেই কর্মসংস্থানের সুযোগ হ্রাস পাওয়া। দেশে যখন বেকারত্ব হুহু করে বাড়ছে, বিশেষত উচ্চশিক্ষিত বেকারের হার মাত্রা ছাড়াতে চলেছে তখন বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ছন্দপতন অর্থনীতির জন্য বিসংবাদ বলে বিবেচিত হওয়ারই কথা। স্মর্তব্য, জাতিসংঘের শিল্প-বাণিজ্য সংস্থা আঙ্কটাডের সর্বশেষ প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষ অবস্থানে ছিল। সে বছর বিদেশি বিনিয়োগ এসেছিল ১ হাজার ৩১ কোটি মার্কিন ডলার। আর সদ্যবিদায়ী ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে মাত্র ৫২৫ কোটি মার্কিন ডলার; যা আগের বছরের অর্ধেকেরও কম। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ার পেছনে ঢাকা টোব্যাকোর শেয়ার প্রায় ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারে জাপান টোব্যাকোর কিনে নেওয়া ঘটনা অবদান রেখেছে। কিন্তু তা বাদ দিলেও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বিদেশি বিনিয়োগ কম এসেছে প্রায় ৩২৫ কোটি ডলার। আলোচ্য এই সময়ে স্থানীয় বিনিয়োগের পরিমাণও কমেছে আশঙ্কাজনকহারে। ফলে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বড় ধরনের ধস নেমেছে। বাংলাদেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টিতে সরকারের আগ্রহ ও উদ্যোগের অভাব নেই। কিন্তু সে আগ্রহ বা উদ্যোগ বাস্তবায়নের উপযোগী প্রশাসনব্যবস্থা না থাকায় কাক্সিক্ষত সুফল অর্জিত হচ্ছে না। বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে এসে বিদেশি উদ্যোক্তারা হয়রানির শিকার হনÑ এমন অভিযোগ ওপেন সিক্রেট। দেশি বিনিয়োগকারীরাও যে একই অবস্থার শিকার সে বিষয়টিও স্পষ্ট। বিনিয়োগ ক্ষেত্রে যে হতাশা বিরাজ করছে তা কাটিয়ে উঠতে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির পাশাপাশি আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রতার অবসান ঘটাতে হবে। ব্যাংক ঋণের হার এক অঙ্কে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নের উদ্যোগও নেওয়া দরকার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর