শুক্রবার, ৩০ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

ডেঙ্গু নিধনে একযোগে অভিযান

আদালতের নির্দেশনা প্রশংসার দাবিদার

এডিস মশার আবাসস্থল ধ্বংস ও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনে সর্বস্তরের মানুষকে নিয়ে একযোগে অভিযান চালানোর নির্দেশনা দিয়েছে হাই কোর্ট। হাই কোর্টের এ নির্দেশনা খুবই তাৎপর্যের দাবিদার। দেশ এখন ডেঙ্গু আতঙ্কে ভুগছে এবং বলা যায়, দেশের প্রায় ১৭ কোটি মানুষই এ আতঙ্কের শিকার। ডেঙ্গুজ্বরে মানুষ আক্রান্ত হয় এডিস মশার কামড়ে। প্রাণঘাতী এ জ্বরের কোনো প্রতিষেধক নেই। ফলে ডেঙ্গু আতঙ্ক থেকে রক্ষা পাওয়ার প্রকৃষ্টতম পথ হলো এডিস মশা নিধন। আর এ কাজটি কোনো সরকার, সিটি করপোরেশন এবং কোনো স্থানীয় সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়। এডিস মশা নিধনে দেশের সব স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানে নামলে এবং সাধারণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করলে সারা দেশের চেহারাই পাল্টে যাবে; যা কোনোভাবেই সরকারি বা সিটি করপোরেশনের কর্মীদের দ্বারা সম্ভব নয়। এমনটি করা হলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেশের মানুষের কল্যাণ ভাবনার বিকাশ ঘটবে। দেশ গড়ার অনুপ্রেরণা জন্ম নেবে। আমরা আশা করব, সরকার হাই কোর্টের নির্দেশনাটি প্রতিপালনের উদ্যোগ নেবে। শুধু এডিস মশার আস্তানা ধ্বংসের জন্য নয়, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, বৃক্ষরোপণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের বিষয়টি তাদের শিক্ষার অংশ হিসেবে নেওয়া যেতে পারে। পরিচ্ছন্নতার দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান লজ্জাজনক স্থানে। দুনিয়ার কোনো দেশের রাস্তাঘাট আমাদের দেশের মতো নোংরা এবং যেখানে-সেখানে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ পড়ে থাকে কিনা জানা নেই। শিক্ষার্থীদের দিয়ে সপ্তাহে অথবা মাসে একবার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো হলে শুধু এডিস মশা বা ডেঙ্গু রোগ নয়, অনেক অসুখ থেকে বাঁচা যাবে। আমাদের দেশে শিক্ষা খাতে রাষ্ট্রীয় বাজেট থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হয়। আমাদের শিক্ষার্থীদের মানুষের মতো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতেই যে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করা হয় তা সহজেই অনুমেয়। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে পরিবেশ সচেতনতা সৃষ্টি করা হলে সে বিনিয়োগ সার্থক হবে। ভবিষ্যতে তাদের কাঁধে যখন পরিবার, সমাজ ও দেশ পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ হবে তখন সুন্দরভাবে সে দায়িত্ব পালনে শিক্ষাজীবনের অভিজ্ঞতা অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করবে।

সর্বশেষ খবর