রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

গরুর পেটের ক্যাপসুল জানাচ্ছে গরুর স্বাস্থ্যতথ্য

শাইখ সিরাজ

গরুর পেটের ক্যাপসুল জানাচ্ছে গরুর স্বাস্থ্যতথ্য

আসাদুজ্জামান আফসার একজন ব্যস্ত মানুষ। নানান ব্যবসাপাতির সঙ্গে জড়িত। কিন্তু কৃষির প্রতি তার আলাদা টান। এটা অবশ্য বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষেরই। কৃষি আমাদের আদি পেশা, তাই রক্তের মাঝেই প্রোথিত কৃষির জন্য ভালোবাসা। এ দেশের প্রতিটি মানুষই কোনো না কোনোভাবে কৃষির সঙ্গে যুক্ত থাকতে চায়। যে যে পেশাতেই থাকুক না কেন, ফল-ফসল উৎপাদন কিংবা প্রাণী-পাখি লালনপালনের একটা অদম্য ইচ্ছা মনের ভিতর লালন করে। আসাদুজ্জামান আফসারও তেমন, আশৈশব তার কৃষির প্রতি ভালোবাসা। সেখান থেকেই নারায়ণগঞ্জের ইছাপুরে গড়ে তোলেন একটি ডেইরি ফার্ম। আগেই বলেছি, আফসার সাহেব একজন ব্যস্ত মানুষ, নানান কাজ নিয়ে তাকে ব্যস্ত থাকতে হয়। কিন্তু এখন আর ফার্মের খোঁজখবর রাখার জন্য তাকে তেমন বেশি সময় দিতে হয় না। কারণ তার গরুর খামারটি স্মার্ট প্রযুক্তির আওতায় আধুনিক একটি খামার। তিনি যেখানেই থাকুন না কেন, প্রতি মুহূর্তে তার খামারের প্রতিটি গরু সম্পর্কে তাৎক্ষণিক তথ্য তিনি পেয়ে যাচ্ছেন তার মোবাইল ফোনটিতে। খামারের কোন গরুটির শরীরে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি, কোন গরুটি ঠিকঠাকমতো খাচ্ছে না, কোন গরুটির গর্ভধারণের সময় হয়েছে সব তথ্যই তিনি পেয়ে যাচ্ছেন তার মুঠোফোনে। প্রিয় পাঠক! এ বিষয়টি আপনাদের কাছে নতুন নয়। এর আগেও ‘হৃদয়ে মাটি ও মানুষে’ দেশ-বিদেশের নানান স্মার্ট প্রযুক্তির গরুর খামারের চিত্র আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি। মনে পড়ছে, ২০১৫ সালে নেদারল্যান্ডসের ডো মার্কে গরুর খামারে গিয়ে অবাক হয়েছিলাম। আধুনিক প্রযুক্তির বিস্ময়কর ব্যবহার দেখে মনে হচ্ছিল গরুর খামার নয়, যেন কোনো এক শিল্পপ্রতিষ্ঠানে চলে এসেছি। ইন্টারনেট অব থিংস বা আইওটি কৃষিতে যে বৈপ্লবিক রূপান্তর আনতে যাচ্ছে এটা ছিল তারই স্মারক। যাকে বলা হচ্ছে স্মার্ট প্রযুক্তি। বর্তমান সময়ে স্মার্ট মানেই ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত থাকা। মুহূর্তেই সব তথ্য পাওয়া যায় যেখান থেকে। এই শতাব্দীতে আমরা প্রবেশ করেছি স্মার্ট যুগে। নেদারল্যান্ডসের গরুর খামারটিও ছিল স্মার্ট একটি গরুর খামার। গরুর খাদ্য দেওয়া থেকে শুরু করে দুধ সংগ্রহ পর্যন্ত সবকিছু নিয়ন্ত্রিত হয় যান্ত্রিক উপায়ে, স্মার্টলি। ডো মার্কের দুধ দোয়ানোর আধুনিক পদ্ধতিটাও বেশ চমকপ্রদ। সেখানে গাভী উন্মুক্ত বিচরণ করতে করতে নিজেই যখন উপলব্ধি করে তার দুধ দেওয়ার সময় হয়েছে, তখন লাইন ধরে দুধ দোয়ানো কেন্দ্রে উপস্থিত হয়। শুধু গাভীর উপলব্ধি দিয়ে যন্ত্র সন্তুষ্ট হয় না, যন্ত্র যখন তার হিসাব দিয়ে উপলব্ধি করবে যে দুধ দোয়ানোর জন্য গাভী প্রস্তুত তখনই সে স্বয়ংক্রিয়ভাবে দুধ দোয়ানো শুরু করবে, অন্যথায় নয়। এরপর দক্ষিণ কোরিয়ায় স্মার্ট গরুর খামারের কথাও নিশ্চয়ই মনে আছে আপনাদের। মাত্র একজন খামারিই দারুণভাবে সামলে নিচ্ছিলেন প্রায় দেড় শ গরুর বড়সড় একটি খামার। সেটাও সম্ভব হয়েছিল স্মার্ট প্রযুক্তির কল্যাণে। এসব দেখে আমার কেবলই মনে হতো কবে আমাদের দেশে এসব প্রযুক্তির খামার গড়ে উঠবে। কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে প্রযুক্তির বিকল্প নেই। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কৃষিকে টিকিয়ে রাখতে হলে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। শেষে গত ডিসেম্বরে গ্রামীণফোনের ডিজিকাউ প্রযুক্তি নিয়ে একটি প্রতিবেদন আপনাদের দেখিয়েছিলাম। নারায়ণগঞ্জের কাঞ্চনে ব্যবসায়ী এম এ সবুর তার গরুর খামারটি নিয়ে এসেছিলেন গ্রামীণফোনের স্মার্ট গরুর খামার ব্যবস্থাপনায়। সেখানে আপনারা দেখেছেন স্মার্ট ফার্ম ব্যবস্থাপনায় প্রতিটি গরুর জন্য একটি করে চিপ থাকে। চিপটি সাধারণত গলার কলারে বা কানে ট্যাগে যুক্ত থাকে, যা গরুর শারীরিক ও পারিপার্শ্বিক সব ধরনের তথ্যই সংগ্রহ করতে সক্ষম। যেমন গরুর দেহের তাপমাত্রা, রক্তসঞ্চালন, জাবরকাটা থেকে শুরু করে প্রজনন সময়ের নির্ভুল হিসাব দেয়। মাতৃগরুর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে সব ধরনের তথ্য দিয়ে অসময়ের গর্ভপাত রোধ করতে সাহায্য করে। গরুর কী ধরনের পুষ্টির প্রয়োজন, কী পরিমাণ আলো-বাতাস লাগবে, এমনকি গাভীর দুধ দেওয়ার সময় সম্পর্কেও নানা তথ্য খামারি ইন্টারনেটের মাধ্যমে যুক্ত বেজ স্টেশন থেকে সরাসরি মোবাইল ফোনে চলে আসে।

আফসার সাহেবের সেঞ্চুরি গরুর খামারটি সে রকমই। খুব একটা ভিন্নতা নেই। ব্যবস্থা একই রকম। দুধের বা মাংসের গরু যা-ই হোক শারীরিক ক্রিয়াকলাপের সব খবর চলে যাচ্ছে কম্পিউটারে। কিন্তু এই খামারের গরুগুলোর গলায় বা কানে কোনো চিপ নেই। এখানেই ভিন্নতা। এই খামারের গরুর পেটে তথ্য আদান-প্রদান করার একটি ডিভাইস স্থাপন করা আছে, সেটিই গরুর শারীরিক সব খবরাখবর পাঠাচ্ছে আফসার সাহেবের মোবাইল ফোনে। পাঠক! পদ্ধতিটি খুব সাধারণ। গরুর পাকস্থলীতে স্থাপন করা হয়েছে ‘বোলাস’ নামের একটি ক্যাপসুলের মতো ডিভাইস। এ ডিভাইসটি গরুর পেটে স্থাপন করতে অপারেশন বা পেট কাটার প্রয়োজন পড়ে না। গলার ভিতর বিশেষ যন্ত্র দিয়ে কণ্ঠনালির একটি স্তরে পৌঁছে দিলেই সেটি গরুর পাকস্থলীতে চলে যায়। এ প্রক্রিয়াটির জন্য বড়জোর ১০ সেকেন্ড সময় লাগে। বায়োসেন্সর বা ‘বোলাস’ গরুর পাকস্থলী থেকে রেডিও তরঙ্গ শনাক্তকরণ প্রক্রিয়ায় তথ্য তৈরি ও প্রদান করে। মূলত এই ‘বোলাস’ হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বহুল আলোচিত একটি আইওটি (ইন্টারনেট অব থিংস) ডিভাইস। অর্থাৎ সেন্সরটি ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত থাকে। স্মার্টফোনের মাধ্যমেই গবাদি পশুর শারীরিক অবস্থার সর্বশেষ তথ্য সম্পর্কে জানা যায়। আগে থেকেই চালু করে দেওয়া ওই ডিভাইসটি গরুর শরীরের ভাষা ও তথ্যসেল হিসেবে কাজ করতে থাকে। গলা বা কানের ট্যাগে লাগানো চিপ থেকে পেটে থাকা ‘বোলাস’ আরও বেশি নির্ভুল তথ্য দেয় বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। আফসার সাহেবকে এ প্রযুক্তিটি দিয়েছে সূর্যমুখী প্রাণিসেবা নামক একটি প্রতিষ্ঠান। এই যুগে কম্পিউটার মানেই মোবাইল। মোবাইল মানেই কম্পিউটার। যা কিছু কম্পিউটারে যেতে পারে, তা-ই আসতে পারে মোবাইলে। প্রযুক্তি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান সূর্যমুখী প্রাণিসেবার নিজস্ব বাংলা অ্যাপ রয়েছে। বোলাসের তথ্যগুলো মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে পাওয়া যাাচ্ছে। অ্যাপ ছাড়াও ফিচার ফোনের মাধ্যমেও মেসেজে সব তথ্য পাওয়া সম্ভব। আসাদুজ্জামান আফসার জানালেন, কয়েকটি ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তিটির ব্যবহার খুবই ফলপ্রসূ। এর মাধ্যমে প্রাণীর জাত উন্নয়ন, সফল প্রজনন, তথ্য সংরক্ষণ, লালনপালন ব্যবস্থাপনা, প্রাথমিক চিকিৎসাসেবার ক্ষেত্রে দারুণ সুবিধা পাচ্ছেন। গরুর বাচ্চা দেওয়ার ২৪ ঘণ্টা আগেই জেনে যাওয়া যাচ্ছে ঠিক কখন গরুটি বাচ্চা প্রসব করবে। একটি গরু অসুস্থ হলে কিংবা কোনো একটি গরুর একবার হিট মিস হলে যে পরিমাণ লোকসান হয়, তার কাছে এই স্মার্ট প্রযুক্তির খরচ তুলনামূলক কমই। জনাব আফসারের মতে, উপকারের বিবেচনায় এই প্রযুক্তির ব্যয় খুব বেশি নয়। প্রতিটি গরু রেজিস্ট্রেশনের জন্য খরচ হচ্ছে ১০০০ টাকা। আর প্রতি মাসে দিতে হচ্ছে ৫০০ টাকা করে। গরুর পেটে স্থাপনকৃত একটি বোলাস পাঁচ বছর নিরবচ্ছিন্ন তথ্য পাঠাতে সক্ষম। খামারে থাকার সময়ই আফসার সাহেবের মোবাইলে একটা মেসেজ এলো, চম্পা নামের গাভীটি ঠিকমতো পানি খাচ্ছে না। তিনি বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নিলেন। আফসার জানালেন, আগাম তথ্য তাকে খামার পরিচালনার ক্ষেত্রে বেশ সহায়তা করছে। এর ফলে বড় ধরনের ক্ষতি থেকে গরুগুলো রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে।

সূর্যমুখী প্রাণিসেবা প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলেছে সমন্বিত একটি প্ল্যাটফর্ম। সেখানে তাদের সঙ্গে রয়েছে ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্স। এ কার্যক্রমে সমর্থন জোগাচ্ছে ইউকেএইড। আর গরুর পেটে বোলাস নামের ডিভাইস স্থাপনের বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন-এফডিএ ও জার্মান এগ্রিকালচার সোসাইটি-ডিএলজি স্বীকৃত। সূর্যমুখী প্রাণিসেবার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফিদা হকের সঙ্গে কথা হয়। তার কাছে জানতে চেয়েছিলাম, যেসব খামারির কমপক্ষে ২০-২৫টি গরু আছে তারা হয়তো খামারে বেজ স্টেশন স্থাপন করে এই সেবা নিতে পারবেন। কিন্তু যারা ২-৩টি করে গরু লালনপালন করেন তাদের কাছে এই সেবা কীভাবে পৌঁছাতে পারেন? তিনি জানালেন, খামারিরা যৌথ উদ্যোগে এই ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে পারেন। অর্থাৎ চার-পাঁচ জন খামারি মিলে একটা বেজ স্টেশন স্থাপন করে এই সেবার আওতাভুক্ত হতে পারেন। তিনি আরও জানালেন, প্রাণিসম্পদে ইন্স্যুরেন্স চালু করার ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বহুদিন ধরেই আমাদের দেশের কৃষক ও খামারি ফসলের বীমাব্যবস্থার পাশাপাশি প্রাণিসম্পদের বীমাব্যবস্থা চালুর দাবি জানিয়ে আসছেন। আমাদের হৃদয়ে মাটি ও মানুষ  পরিচালিত কৃষি বাজেট কৃষকের বাজেট অনুষ্ঠানে গত এক যুগে বহুবার খামারিদের এমন দাবি উচ্চারিত হয়েছে। উল্লেখ করা প্রয়োজন, সম্প্রতি ঢাকায় প্রাণিসম্পদের বীমাবিষয়ক দুটি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। একটি ব্র্যাক ব্যাংক ও গ্রীন ডেলটা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির যৌথ উদ্যোগে দেশে প্রথমবারের মতো প্রাণিসম্পদের বীমা কার্যক্রম ‘ক্যাটেলশিল্ড’। আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে সূর্যমুখী প্রাণিসেবা ও ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্সের উদ্যোগে এই ‘সূর্যমুখী প্রাণিসেবা’। ভালো লাগার বিষয় হচ্ছে, বেসরকারি পর্যায়ে হলেও আধুনিক প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে খামারিদের দাবি পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে। যাই হোক, সেঞ্চুরি খামারের স্বত্বাধিকারী তিন মাসেই এই প্রযুক্তি ব্যবহারের যতটুকু সফলতা পেয়েছেন, তার আলোকেই বলছেন, দেশব্যাপী দুগ্ধ খামারি তথা প্রাণিসম্পদের সঙ্গে যুক্ত মানুষের নানা সংকট রয়েছে। নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার মানুষকে সেসব সংকট থেকে মুক্তি দিতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে এ রকমের প্রাণিসেবা কার্যক্রম আরও সহজলভ্য হওয়া প্রয়োজন। বর্তমান সময়টি দ্রুত পরিবর্তনশীল। নতুন নতুন প্রযুক্তি এসে রাতারাতি পাল্টে দিচ্ছে আমাদের চিন্তাভাবনা। উৎপাদন খাতে নানারকম প্রযুক্তি সংযুক্ত হওয়ায় তা ব্যাপক আশার সঞ্চার করছে। নতুন নতুন প্রযুক্তি সারা বিশে^ই কৃষি অর্থনীতির জন্য অনন্য এক আশীর্বাদ। প্রাণিসম্পদে ইন্টারনেট অব থিংস বা আইওটির কার্যকর ব্যবহারের মধ্য দিয়ে নতুনভাবে স্বপ্ন দেখবেন সারা দেশের খামারি। এখন আগ্রহী খামারিদের কাছে সহজে ও স্বল্পমূল্যে এসব প্রযুক্তি পৌঁছে দিতে পারলে মোটা দাগে এর সুফল বোঝা যাবে। এ ক্ষেত্রে বেসরকারি উদ্যোগগুলোকে এগিয়ে নিতে সরকারের আন্তরিকতা যেমন প্রয়োজন, একইভাবে প্রয়োজন খামারি ও মাঠ পর্যায়ের সরকারি-বেসরকারি প্রাণিসম্পদ কর্মীদের প্রযুক্তিগত জানাশোনা বাড়ানো। এ ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য কার্যক্রম গ্রহণ করা জরুরি। গত ১ সেপ্টেম্বর ‘সূর্যমুখী প্রাণিসেবা’ প্ল্যাটফর্মটি উদ্বোধন করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলী খান খসরু। উপস্থিত ছিলেন প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. হীরেশ রঞ্জন ভৌমিক। আমারও উপস্থিত থাকার সুযোগ হয়েছিল। সেখানে আমি বলেছিলাম, এসব প্রযুক্তিসেবা প্রান্তিক খামারিদের কাছে পৌঁছে দিতে না পারলে সার্বিক সুফল পাওয়া সম্ভব হবে না। আমরা ইতিমধ্যে দেখেছি ফসল কৃষির ক্ষেত্রে সরকার কৃষিযন্ত্রে শতকরা ৫০ ভাগ ভর্তুকি দিয়ে আসছে, হাওরাঞ্চলে এই ভর্তুকির পরিমাণ শতকরা ৭০ ভাগ। এ ছাড়া ইউরিয়া সারের ক্ষেত্রে সরকার ভর্তুকি দিয়ে আসছে। গবাদি পশু খামারি ও মাছ চাষিদের প্রযুক্তি সেবাতেও সরকারের সুদৃষ্টি প্রত্যাশা করছি। সাধারণ কৃষক ও খামারিদের প্রযুক্তির ব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারলে কৃষি উৎপাদনের পরিমাণ যেমন বৃদ্ধি পাবে, তেমন টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার মাধ্যমে দেশ কৃষি অর্থনীতি সমৃদ্ধ হয়ে উঠবে। দেশের ক্রমবর্ধমান ডিম, মাংস ও দুধের চাহিদা পূরণ এবং এর মাধ্যমে নাগরিকের পুষ্টি গ্রহণ বৃদ্ধিতে প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি পণ্যের উন্নয়নে বিশ^ব্যাংকের ৫০০ মিলিয়ন ডলার প্রকল্পের কথা শুনে আসছি। প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পে ২ মিলিয়ন ছোট পরিবারভিত্তিক কৃষক এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি কৃষিপণ্যভিত্তিক উদ্যোক্তার পণ্যের প্রসার ও বাজার সুবিধার সৃষ্টির যে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে সেখানে এ ধরনের প্রযুক্তিনির্ভর খামার ব্যবস্থাপনাকে যুক্ত করা প্রয়োজন। আগামীর কৃষিপ্রযুক্তির কৃষি, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় প্রযুক্তিসেবা যুক্ত না করলে আগামীর পথে পিছিয়ে পড়তে হবে।         

মিডিয়া ব্যক্তিত্ব।

[email protected]

সর্বশেষ খবর