নিউইয়র্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে ভারতের জাতীয় নাগরিকপঞ্জি নিয়ে বাংলাদেশের উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই বলে আশ্বস্ত করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আসন্ন ভারত সফরের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতীয় নেতার সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তিস্তার পানি বণ্টনসহ দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেন। ২৭ মিনিটের বৈঠক শেষে দুই নেতা হাসিমুখেই বেরিয়ে আসেন নিউইয়র্কের প্যালেস হোটেলের কেনেডি রুম থেকে। বৈঠক থেকে বেরিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন সাংবাদিকদের জানান, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সৌহার্দ্যপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে বাংলাদেশের সব গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু ভারতীয় নেতার কাছে তুলে ধরা হয়। এগুলোর ভালো সদুত্তরও পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, আমাদের দুই দেশের যে সম্পর্ক, সেখানে ছোটখাটো বিষয়গুলোর সমাধান সহজেই সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। এগুলো নিয়ে উদ্বেগের কোনো কারণ নেই। তিস্তা প্রসঙ্গে মোদি বলেন, ভাই ও বোনের সম্পর্ক নিয়ে সবার উপকারে কাজ করা হবে। তিস্তাসহ সাতটি নদ-নদীর ব্যাপারে বোঝাপড়ার আশাবাদও ব্যক্ত করেছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী। নিউইয়র্কে ভারতীয় প্রতিপক্ষের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ বৈঠক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফর সম্পর্কে আশাবাদ সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক গত চার যুগের মধ্যে এখন সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ পর্যায়ে রয়েছে। দুই দেশের সরকারই এ সম্পর্ক এগিয়ে নিতে বদ্ধপরিকর। টেকসই সুসম্পর্কের স্বার্থে এটিকে দুই দেশের জনগণের বন্ধুত্বে রূপান্তরিত করা দরকার। সেটি করতে হলে তিস্তাসহ অভিন্ন নদ-নদীর পানি বণ্টন চুক্তিতে পৌঁছানো জরুরি। স্বীকার করতেই হবে, পানি বণ্টন অবশ্যই একটি স্পর্শকাতর বিষয়। ভাটির দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে বিভিন্ন নদ-নদীর পানির জন্য ভারতের দিকে চেয়ে থাকতে হয়। বিশেষত তিস্তার পানিপ্রবাহ প্রায় রুদ্ধ হয়ে পড়ায় শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের লাখ লাখ মানুষকে কষ্টভোগ করতে হচ্ছে। পানির অভাবে চাষাবাদে সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিবন্ধকতা। দুই দেশের সুসম্পর্কে সংশয় সৃষ্টি করছে প্রতিশ্রুত তিস্তা চুক্তি না হওয়ার ঘটনা। আমরা আশা করব, প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন ভারত সফরকালে এ বিষয়ে দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান হবে।