সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

জলদস্যুদের আত্মসমর্পণ

এ সুমতি অভিনন্দনযোগ্য

জলদস্যুতা বাংলাদেশ নামক ভূখন্ডের জন্য এক অভিশাপের নাম। শত শত বছর ধরে এই অভিশাপ বিরাজ করছে। ব্রিটিশ আমলেও দেশের সাগর ও নৌ এলাকায় জলদস্যুদের অবাধ রাজত্ব বিরাজ করেছে। পাকিস্তানে ২৩ বছর ধরে চলেছে মানুষবেশী হায়েনাদের দৌরাত্ম্য। স্বাধীনতার পরও প্রথম চার দশক দেশের নৌসীমা ছিল জলদস্যুদের দখলে। তাদের কাছে জিম্মি ছিল লাখ লাখ মৎস্যজীবী। বিশেষত সুন্দরবনসহ সাগর ও নদী পাড়ের বনাঞ্চলে জলদস্যু ও বনদস্যুদের দৌরাত্ম্য ছিল চরমে। বাংলাদেশের নৌসীমার নিরাপত্তা নিয়ে বারবার প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমান সরকারের আমলে জলদস্যু ও বনদস্যুদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ শুরু হয়। তাদের রাজনৈতিক কানেকশনে হানা হয় আঘাত। উপর্যুপরি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে একের পর এক জলদস্যু ও বনদস্যু দলের আত্মসমর্পণ নিশ্চিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত শনিবার কক্সবাজারের মহেশখালী, পেকুয়া, চকরিয়া ও কুতুবদিয়ার ১২ জলদস্যু বাহিনীর দুর্ধর্ষ ৯৬ জলদস্যু, অস্ত্রের কারিগর ও সন্ত্রাসী স্বাভাবিক জীবনে ফেরার আশায় আত্মসমর্পণ করেছে। এ খবরটিকে একটি ইতিবাচক ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। আত্মসমর্পণের সময় তারা দেশি-বিদেশি ১৫৫টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ২৮৪ রাউন্ড গুলি এবং অস্ত্র তৈরির বিভিন্ন প্রকার সরঞ্জামাদি জমা দিয়েছে। শনিবার বেলা ১১টায় মহেশখালী উপজেলার পাহাড়ি ইউনিয়ন কালারমারছড়া ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে। এরপর অতীত কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত এই জলদস্যুরা পরিবার-পরিজন নিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার শপথ নেয়। মন্ত্রী তাদের পুনর্বাসনের জন্য তাৎক্ষণিক জনপ্রতি ৫০ হাজার করে টাকা প্রদান করেন। জলদস্যু ও বনদস্যুদের কারণে কক্সবাজারের উল্লিখিত দ্বীপগুলোর অধিবাসীরা ছিল জিম্মি। দুর্গম এলাকায় তৈরি হতো আগ্নেয়াস্ত্র। সংলগ্ন জলসীমায় জলদস্যুরা যেমন ইচ্ছা তেমন দস্যুতার অবতারণা ঘটাত। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একের পর এক অভিযান তাদের দস্যুতা ত্যাগ এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে উদ্বুদ্ধ করেছে। আমরা আশা করব সংশ্লিষ্টরা দস্যুতা ত্যাগের শপথে অটল থাকবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর