বৃহস্পতিবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

গার্মেন্ট অসন্তোষ

বেতন পরিশোধে টালবাহানা দুঃখজনক

গার্মেন্ট শ্রমিকদের বেতন যথাসময়ে পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা মানেননি অধিকাংশ গার্মেন্ট মালিক। ফলে দেশের বিভিন্ন স্থানে গার্মেন্ট শ্রমিকদের অসন্তোষ দানা বেঁধে উঠেছে। লকডাউনের মধ্যেও তারা সড়ক অবরোধ ও মিছিল করছেন। লঙ্ঘিত হচ্ছে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশনা। রাজধানীর উত্তরা, মিরপুরসহ বিভিন্ন স্থানে গত দুই দিন গার্মেন্ট শ্রমিকরা বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন। গাজীপুর ও সাভারে পাওনা টাকা আদায় এবং ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে লকডাউনের মধ্যেও গার্মেন্ট শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। টায়ারে আগুন ধরিয়ে তারা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধসহ সংশ্লিষ্ট গার্মেন্টের সামনে বিক্ষোভ করেছেন। সড়ক অবরোধের কারণে জরুরি পণ্যবাহী গাড়ি আটকা পড়ে মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বেতন-ভাতার দাবিতে কয়েকটি গার্মেন্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে শিল্পপুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগও করেছেন শ্রমিকরা। সোমবার শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে গাজীপুরের দক্ষিণ সালনায় অক্সফোর্ড শার্টস লিমিটেড নামে একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মালিকপক্ষ ও শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে। আলোচনায় মালিকপক্ষ কোনো শ্রমিক ছাঁটাই না করার প্রতিশ্রুতি দিলে শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণভাবে ফিরে যান। বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে সাভারে পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভও দেখিয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, একটি কারখানায় দুই মাসের বেতন বাকি রয়েছে। ১৪ এপ্রিল শ্রমিকদের বেতন দেওয়ার কথা বলে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। পরে কারখানা কর্তৃপক্ষ ১৮ এপ্রিলের মধ্যে বকেয়া পরিশোধের ঘোষণা দিলে শ্রমিকরা আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন। গার্মেন্টশিল্পের মালিকরা যাতে সময়মতো মজুরি দিতে পারেন তা নিশ্চিত করতে সরকার বড় ধরনের প্রণোদনাদানের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। গার্মেন্ট মালিকদের সংগঠন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল শ্রমিকরা সময়মতো বেতন পাবেন। কিন্তু কথা দিয়ে কথা রাখার নীতিতে তারা যে অবিচল থাকতে পারেননি, মজুরি পরিশোধ নিয়ে সৃষ্ট অসন্তোষ তারই উদাহরণ। নিজেদের স্বার্থেই মালিকপক্ষ সংঘাত সৃষ্টির পথ থেকে সরে আসবেন- এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর