বৃহস্পতিবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

ওষুধের বিজ্ঞাপন

জনস্বার্থে বিধিমালা সংশোধন করুন

করোনাভাইরাসের ফলে সৃষ্ট অবরুদ্ধ অবস্থার কারণে দেশের অন্যসব শিল্প মারাত্মকভাবে মার খেলেও ওষুধশিল্পের অবস্থা বিপরীত। ওষুধ বিক্রি যে অন্য সময়ের চেয়ে বেড়ে গেছে তা গত এক মাসে ওষুধের দোকানে মানুষের ভিড় দেখলেই অনুভব করা যাবে। অন্য সময় ওষুধ কোম্পানিগুলো মেডিকেল রিপ্রেজেনটেটিভের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা শুধু ডাক্তারদের পেছনে ব্যয় করলেও দেশ-জাতির দুর্দিনে কোটি কোটি মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় তাদের কোনো ভূমিকা নেই। এজন্য দায়ী ওষুধ কোম্পানির বিজ্ঞাপন প্রচারের হরেক ধরনের নিষেধাজ্ঞা। তা প্রত্যাহার করে বিশ্ববাজারে সুনাম পাওয়া বাংলাদেশের ওষুধ কোম্পানিগুলোকে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখলে তাতে দেশবাসী লাভবান হবে। একই সঙ্গে নিজেদের পণ্যের প্রচার বাড়ায় বিজ্ঞাপনদাতারাও সুফল পাবেন। এ ব্যাপারে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর বিধিমালা সংশোধন করে ওষুধ কোম্পানিগুলোর বিজ্ঞাপন প্রচারের সুযোগ দেবে- এমনটিই আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশের ওষুধশিল্প নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা প্রতিবেদনে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) জানিয়েছে, দেশে ওষুধ বিপণন বাবদ মোট টার্নওভারের ২৯ শতাংশের বেশি খরচ করছে কোম্পানিগুলো। দেশে ওষুধের বাজারের আকার ২০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। সে হিসেবে শুধু বিপণন বাবদ ওষুধ কোম্পানিগুলো বছরে ৬ হাজার কোটি টাকার বেশি খরচ করছে। কিন্তু এ বিপণন প্রক্রিয়াটি খুবই অস্বচ্ছ এবং অগ্রহণযোগ্য। ওষুধ কোম্পানিগুলো প্রধানত ডাক্তারদের উপঢৌকন হিসেবে এ ৬ হাজার কোটি টাকার বেশির ভাগ ব্যয় করে। গণমাধ্যমে নিজেদের উৎপাদিত ওষুধের বিজ্ঞাপন দেওয়ার সুযোগ না থাকায় ওষুধ কোম্পানিগুলো উৎকোচ দিয়ে তাদের ওষুধ যাতে চিকিৎসকরা রোগীর প্রেসক্রিপশনে লেখেন তা নিশ্চিত করে। ওষুধের বিজ্ঞাপন সংবাদপত্রে প্রচারের সুযোগ থাকলে এ অনৈতিক ব্যবসায়িক কর্মকান্ড বন্ধ হবে। দেশের মানুষ মানসম্মত ওষুধ ব্যবহারের সুযোগ পাবে। আমরা আশা করব- জনস্বার্থে সরকারের কর্তাব্যক্তিরা বিষয়টি ভেবে দেখবেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর