রবিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

বন্দরে কনটেইনারজট

দ্রুত খালাসের উদ্যোগ নিতে হবে

করোনাভাইরাসের প্রভাবে দেশের অর্থনীতির হৃৎপি- হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রাম বন্দরে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। মাত্র তিন সপ্তাহের ব্যবধানে কনটেইনার ডেলিভারি ৯০ শতাংশ হ্রাস পাওয়ায় দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। বন্দর কর্তৃপক্ষের ভাষ্যমতে, আগে যেখানে সাড়ে ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টিইইউএস কনটেইনার পরিবহন হতো বর্তমানে তা নেমে এসেছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টিইইউএসে। এর অনিবার্য পরিণতিতে চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনারজট সৃষ্টি হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে কিছু কনটেইনার বেসরকারি ডিপোয় স্থানান্তরের জন্য এনবিআরের অনুমতি চাওয়া হয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে। তাদের মতে, অনুমতি মিললে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হবে। ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের মতে, সারা দেশে যখন লকডাউন পরিস্থিতি চলছে এমন পরিস্থিতিতে কারও কিছু করার নেই। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষের উচিত খাদ্য ও ওষুধ-সংশ্লিষ্ট পণ্যগুলো দ্রুততার সঙ্গে ছাড় দেওয়া। একইভাবে শিপিং এজেন্টের জরিমানা করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত মওকুফ করার অনুরোধ করেছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা। বর্তমানে বহির্নোঙরে অপেক্ষমাণ রয়েছে ৩৬টি কনটেইনারবাহী জাহাজ। মূল জেটিতে কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে রয়েছে ১০টি। কনটেইনারজট সৃষ্টি হওয়ায় জাহাজ থেকে কনটেইনার নামানো যাচ্ছে না। ফলে একেকটি জাহাজকে বন্দরে ছয় থেকে সাত দিন বেশি থাকতে হচ্ছে। প্রতিদিনই ফিক্সড অপারেটিং কস্ট বাবদ বড় অঙ্কের মাশুল দিতে হচ্ছে আমদানিকারকদের। চূড়ান্ত হিসাবে এ বাড়তি অর্থ পণ্য ক্রেতাদের গুনতে হবে। খাদ্যপণ্য বন্দরে পড়ে থাকলে সেগুলোর দাম অনিবার্যভাবে বৃদ্ধি পাবে। করোনাভাইরাসজনিত দুর্যোগ সত্ত্বেও দেশের অর্থনীতির লাইফলাইন চট্টগ্রাম বন্দর সচল রাখার জন্য সরকারকে সক্রিয় হতে হবে। লকডাউন দীর্ঘস্থায়ীভাবে বহাল থাকলে তা হবে আত্মহননের শামিল। অর্থনীতিসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো যাতে সক্রিয় থাকে সেদিকে সরকার তীক্ষè নজর রাখবে- এটি খুবই প্রত্যাশিত। দেশের আমদানি-রপ্তানিতে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতেও নিতে হবে কার্যকর ব্যবস্থা। অস্তিত্বের স্বার্থেই এ বিষয়ে সঠিক কর্মপন্থা নির্ধারণ এখন সময়ের দাবি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর