মঙ্গলবার, ২১ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

মাহে রমজানের প্রস্তুতি নিতে হবে

মুফতি মুহাম্মদ আল আমিন

মাহে রমজানের প্রস্তুতি নিতে হবে

মহান আল্লাহ প্রিয় বান্দাকে কিছু কিছু বিশেষ সময় উপহার দেন ইবাদত-বন্দেগির জন্য। গুনা মাফের জন্য। আদরের বান্দাকে কাছে টানার জন্য। রহমতের চাদরে আবৃত করার জন্য। হিজরি বারো মাসের মধ্যে রমজান আল্লাহর নৈকট্যলাভের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাস। এ মাসে দিনের বেলায় রোজা ফরজ করা হয়েছে এবং রাতের বেলায় তারাবির নামাজ পড়ার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। রমজান গুনা মাফের মাস। তাকওয়া ও আল্লাহভীতি অর্জনের মাস। আল্লাহর সঙ্গে বান্দার সম্পর্ক তৈরির মাস। দোয়া কবুলের মাস। এ মাস ইবাদত-বন্দেগিতে কাটাতে হলে আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। নিজেদের চাকরি, ব্যবসা ও অন্যান্য কাজের ঝামেলা কমিয়ে ফেলতে হবে। কোথাও সফর, সাংসারিক কাজ, কেনাকাটা ও অন্যান্য দায়দায়িত্ব রমজানের আগেই সেরে নিতে হবে। অনেক মুসলমানকে দেখা যায় রমজানে এই পরিমাণ কেনাকাটায় ব্যস্ত যে, মনে হয় এ মাস শুধু কেনাকাটার জন্যই নাজিল হয়েছে। এ মাসে কাজের চাপ যেমন কমিয়ে ফেলতে হবে তেমনি নিজেদের চাকর-বাকর ও অন্য অধীনদের ওপরও কাজের বোঝা হালকা করে দিতে হবে; যেন তাদের রোজা রাখতে কষ্ট না হয়। রমজান হলো সংযমের মাস। নিজেকে নিয়ন্ত্রণের মাস। কম খাওয়ার মাস। অথচ আমাদের অনেকে তখন এই পরিমাণ খায়, অন্য এগারো মাসেও এতটা খাওয়া-দাওয়া করে না। রোজা রাখার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে আল্লাহর ভয় সৃষ্টি হয়। আল কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে, ‘হে ইমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করে দেওয়া হয়েছে যেমন তোমাদের পূর্ববর্তী নবীদের অনুসারীদের ওপর ফরজ করা হয়েছিল। এ থেকে আশা করা যায়, তোমাদের মধ্যে তাকওয়ার গুণাবলি সৃষ্টি হয়ে যাবে। এ কতিপয় নির্দিষ্ট দিনের রোজা। যদি তোমাদের কেউ রোগাক্রান্ত অথবা মুসাফির হয়ে থাকে তাহলে সে যেন অন্য দিনগুলোয় এ সংখ্যা পূর্ণ করে। আর যাদের জন্য রোজা অত্যন্ত কষ্টদায়ক তারা যেন ফিদিয়া দেয়। একটি রোজার ফিদিয়া একজন মিসকিনকে খানা খাওয়ানো। আর যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় ও সানন্দে কিছু বেশি সৎ কাজ করে, তা তার জন্য ভালো। তবে যদি তোমরা সঠিক বিষয় অনুধাবন করে থাকো তাহলে তোমাদের জন্য রোজা রাখাই উত্তম।’  সূরা বাকারা, আয়াত ১৮৩-১৮৪। উল্লিখিত আয়াতে অতিশয় বৃদ্ধ লোকদের জন্য রোজা রাখার পরিবর্তে ফিদিয়া দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। যারা কোনোভাবেই রোজা রাখতে সক্ষম নয় এবং আর কখনোই রোজা রাখার মতো সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা নেই তাদের জন্য এ সুযোগ। তবে যারা পরবর্তীতে সুস্থ হয়ে যায় এবং রোজা রাখতে সক্ষম হয় তাদের অবশ্যই রোজা পুনরায় রাখতে হবে। রোজা রাখার পুরস্কার বিষয়ে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি পূর্ণ বিশ্বাসসহকারে ও সওয়াব লাভের প্রত্যাশায় রমজানের রোজা রাখে তার আগের সব গুনা মাফ করে দেওয়া হবে এবং যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে ও সওয়াব অর্জনের উদ্দেশ্যে রমজানের রাতে ইবাদত করে তার পূর্ববর্তী সব গুনা মাফ করে দেওয়া হবে।’ বুখারি, মুসলিম।

লেখক : খতিব, সমিতি বাজার মসজিদ, নাখালপাড়া, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর