করোনাভাইরাসে যখন বিশ্বের মানুষ বিপর্যস্ত, তখন মাহে রমজান আমাদের মাঝে হাজির হয়েছে মহান আল্লাহর রহমতের সুযোগ হিসেবে। রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের এই পবিত্র মাসে আমরা আল্লাহর দরবারে করোনা মহামারীর কবল থেকে মানবজাতিকে রক্ষার আকুতি জানাব। আল্লাহ যাতে তাঁর রহমতের ভা-ার খুলে দেন সে প্রত্যাশায় সিয়াম সাধনায় ব্রতী হব। রমজানের এই পবিত্র মাস ভোগবিলাস, অপচয় ও অসংযমের পথ থেকে মানুষকে দূরে থাকার শিক্ষা দেয়। সত্য ও মিথ্যার পার্থক্য রচনাকারী আল কোরআন নাজিল হয়েছিল মহিমান্বিত এই মাসে। আত্মসংযমের মাধ্যমে বিশ্বাসীরা যাতে ইন্দ্রিয়, আত্মিক উভয় দিক থেকে সর্বশক্তিমান আল্লাহর সন্তুষ্টিবিধানে নিয়োজিত হয় সে উদ্দেশ্যে সব সুস্থ ও সাবালক নর-নারীর জন্য সিয়াম সাধনাকে অবশ্যপালনীয় ইবাদত হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। বিশ্বাসী মানুষ এই পবিত্র মাসে যা কিছু অকল্যাণকর তা পরিত্যাগ করে মহান আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের প্রয়াস পায়। মুমিনদের বিশ্বাস, মানুষের পাপের কারণেই বালা-মুসিবতের উদ্ভব ঘটে। ভোগবিলাসিতা ও অসংযমের কারণেই করোনাভাইরাসের মতো মহামারী থাবা বিস্তার করে। এবারের রমজানে আমরা অসংযমী হওয়ার প্রবণতা থেকে সরে এসে নিজদের আল্লাহর রহমতের যোগ্য করে তুলব। রমজানে নিত্যপণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে রোজাদারদের কষ্টের মুখে ঠেলে দেওয়া সামাজিক দৃষ্টিতে যেমন গর্হিত, তেমন ধর্মীয় দিক থেকেও অপরাধ। প্রতি বছরই মাহে রমজানে নিত্যপণ্যের মূল্য বাড়ায় অসৎ ব্যবসায়ীরা। ধর্মীয় দৃষ্টিতে তা যেমন গুনা তেমন আইনের দৃষ্টিতেও নিন্দনীয়। এ গর্হিত কর্মকা- দমন সরকারের কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত। প্রশাসন এ ক্ষেত্রে কতটা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে তার ওপর সরকারের সুনামও নির্ভরশীল। প্রতি বছরের মতো এ বছরও মাহে রমজানে নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টির অপপ্রয়াস চলছে। পর্যাপ্ত মজুদ থাকা সত্ত্বেও রমজান উপলক্ষে সাহরি ও ইফতারে ব্যবহৃত পণ্যের দাম কেন বাড়ছে, কেন সিয়াম সাধনার ধর্মীয় কর্তব্য লঙ্ঘন করে ব্যবসায়ীদের একাংশ মুনাফাখোরিতে লিপ্ত হচ্ছে তা খুঁজে বের করে সংশ্লিষ্টদের আইনের আওতায় আনতে সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে। রোজাদারদের স্বাচ্ছন্দ্য বাড়াতে দায়িত্বশীলরা সক্রিয় হলে তারা যেমন গণমানুষের আস্থা অর্জন করবেন, তেমন আল্লাহর রহমতও নিশ্চিত হবে।