শুক্রবার, ৭ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

বৈরুতে বিস্ফোরণ

পুরান ঢাকার শঙ্কা নিয়ে ভাবুন

দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে ১৯৪৫ সালের ৬ ও ৯ আগস্ট আণবিক বোমা ফেলে ধ্বংস করা হয়েছিল জাপানের সমৃদ্ধ দুই নগরী হিরোশিমা ও নাগাসাকি। এ ঘটনার ৭৫ বছর পর আরেক ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ দেখল বিশ্ববাসী। ভূমধ্যসাগর-পাড়ের মনোরম সৌন্দর্যের দেশ লেবাননের রাজধানী বৈরুতে সমুদ্রবন্দরের ওয়ারহাউসে ভয়াবহ বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছে অন্তত দেড় শ মানুষ। আহতের সংখ্যাও বিপুল। বিস্ফোরণে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে বৈরুতের এক বিশাল এলাকা। হাজার হাজার ঘরবাড়ি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ঘরহারা হয়ে পড়েছে ৩ লাখ মানুষ। ৭৫ বছর আগে হিরোশিমা-নাগাসাকির ধ্বংসযজ্ঞ ছিল মানুষের ইচ্ছাকৃত অপরাধ। বৈরুতের বিস্ফোরণের দায় কার তা নিশ্চিত করে বলা না গেলেও এর পেছনে কোনো না কোনো মানুষের গাফিলতি যে জড়িত তা সহজে অনুমেয়। সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী গুদামে দীর্ঘদিন ধরে মজুদ থাকা ‘অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট’ থেকে বিস্ফোরণ ঘটে। পারমাণবিক বোমার শক্তিসম্পন্ন এ বিস্ফোরণের শব্দে শুধু বৈরুত নয় গোটা লেবানন কেঁপে ওঠে। বাংলাদেশের জন্য মর্মান্তিক খবর হলো, বিস্ফোরণে অন্তত চার বাংলাদেশি প্রাণ হারিয়েছেন। জাতিসংঘ শান্তি মিশনে জড়িত বাংলাদেশি রণতরী ‘বিজয়’ বিস্ফোরণের সময় নোঙর করা ছিল বৈরুতের বন্দরে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় জাহাজটি। আহত হন ২১ নৌসেনা; যার একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বৈরুতের বিস্ফোরণ বাংলাদেশে শোকের ছায়া বিস্তার শুধু নয়, আশঙ্কাও সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার পুরনো অংশে রয়েছে অসংখ্য রাসায়নিক গুদাম। এ পর্যন্ত দুটি বড় ধরনের অগ্নিকান্ডে বিপুল মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। বৈরুতের মতো বড় ধরনের কোনো অঘটন ঘটলে তাতে যে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানির আশঙ্কা থাকবে তা সহজে অনুমেয়। ফলে এ বিষয়ে সরকার বা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কূম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙবে- এমনটি বাঞ্ছনীয়। বৈরুতকান্ডে হতাহতের জন্য আমাদের সহানুভূতি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর