কারাগার থেকে দন্ডপ্রাপ্ত আসামি নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা নতুন নয়। তবে একে সব সময় বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখা হয়। কড়া নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে চলতে হয় কারাগারে। স্বভাবতই কারা কর্তৃপক্ষের চোখ ফাঁকি দেওয়া মোটেও সোজা কাজ নয়। এ ধরনের ঘটনা ঘটলে নিশ্চিতভাবে বলা যায়, কারা কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব পালনে শৈথিল্য ছিল। কারাগারের নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। আবারও তার প্রমাণ পাওয়া গেল, বৃহস্পতিবার কাশিমপুর কারাগার থেকে সাজাপ্রাপ্ত আসামি আবুবকর সিদ্দিক নিখোঁজ হওয়ার মাধ্যমে। কোনাবাড়ী থানায় একটি মামলা হয়েছে। ইতোমধ্যে কাশিমপুর কারাগারের ১২ কারারক্ষীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ছয়জনকে সাময়িক বরখাস্ত ও ছয়জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আবুবকরের বাড়ি সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার আবাদ চন্ডীপুর। তার বাবার নাম আলী গাইন। কারা কর্তৃপক্ষ বলছেন, আবুবকর সিদ্দিক ২০১১ সালের ১৫ জুন রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে এসেছিলেন ফাঁসির আসামি হিসেবে। ২০১২ সালের ২৭ জুলাই তার সাজা সংশোধন করে যাবজ্জীবন দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বন্দীদের গণনাকালে তাকে পাওয়া যায়নি। ২০১৫ সালেও তিনি কারাগার চত্বরে একবার পালিয়ে ছিলেন। পরে কারাগারের একটি পানির ট্যাংকের ভিতর থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনার পর কিছুদিন তাকে কারাগারে শিকল পরিয়ে রাখা হয়। এতে আবুবকর মানসিকভাবে কিছুটা বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়েন। পরে তাকে শিকলমুক্ত করে দেওয়া হয়। কারা চত্বরে তিনি অন্য বন্দীদের সঙ্গে অনেক সময় কাজকর্ম করতেন। তবে তাকে মানবিক কারণে কাজের জন্য চাপ দেওয়া হতো না। কাশিমপুর কারাগার কর্তৃপক্ষ ধারণা করছেন, আবুবকর সিদ্দিক জেলের ১৮ ফুট দেয়াল বেয়ে চলে গেছেন। ভিডিও ফুটেজ দেখে নিশ্চয় এর আলামত পাওয়া যাবে। এ ঘটনার দায় যাদের তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। দায়িত্ব পালনে কর্তৃপক্ষকে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের পরিচয় দিতে হবে।