মঙ্গলবার, ২৫ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনার ভ্যাকসিন সংগ্রহ

স্বচ্ছতা নিশ্চিত করাও জরুরি

করোনাভাইরাস মানবজাতির জন্য সাক্ষাৎ বিপদ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে এবং ইতোমধ্যে কয়েক লাখ মানুষ প্রাণও হারিয়েছে। আনুমানিক হিসাবে পৃথিবীর কয়েক কোটি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে এ ঘাতক ভাইরাসে। দুনিয়াজুড়ে মানুষের জীবন ও জীবিকায় তা যে স্থবিরতা সৃষ্টি করেছে আর্থিক বিচারে সে ক্ষয়ক্ষতি গত দুটি বিশ্বযুদ্ধের চেয়েও বেশি। বাংলাদেশেও করোনা আবির্ভূত হয়েছে সাক্ষাৎ অভিশাপ হিসেবে। বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় জিডিপি প্রবৃদ্ধির দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় দ্রুত অগ্রযাত্রার যে স্বপ্ন সৃষ্টি করেছিল, তার অনেকটাই কেড়ে নিয়েছে করোনাভাইরাস। ইতোমধ্যে এ ঘাতক ভাইরাস কেড়ে নিয়েছে প্রায় ৪ হাজার জীবন। করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লাখ ছুঁইছুঁই করছে। প্রকৃত আক্রান্তের সংখ্যা এর অন্তত ২০ গুণ বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মানুষের টিকে থাকা ও জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে ভ্যাকসিন উদ্ভাবন। দেশবাসীকে রক্ষায় দুটি প্রকল্পের মাধ্যমে ৯ কোটি ডলারের ভ্যাকসিন কেনার প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। এ ৯ কোটি ডলারের মধ্যে বিশ্বব্যাংক ৪ কোটি, এডিবি ২ কোটি ও এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক ৩ কোটি ডলার দেবে। এসব ভ্যাকসিন প্রাথমিকভাবে ডাক্তার, নার্সসহ ১০ লাখ ফ্রন্টলাইনার কর্মী ও সাড়ে ১২ লাখ বয়স্ক নাগরিককে দেওয়া হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, বিভিন্ন সংস্থার ২৭টি ভ্যাকসিন পরীক্ষামূলক প্রয়োগের পর্যায়ে আছে। এর মধ্যে রাশিয়া প্রথম ভ্যাকসিন প্রয়োগের ঘোষণা দেওয়ায় বিশ্বজুড়ে হইচই পড়ে গেছে। এর বাইরে ভ্যাকসিন তৈরির কাজে এগিয়ে আছে ব্রিটেন, চীন ও যুক্তরাষ্ট্র। তিন দেশের ভ্যাকসিনই পরীক্ষামূলক প্রয়োগের তৃতীয় পর্যায়ে আছে। ভ্যাকসিন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন না পেলেও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তা পেতে সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে বিভিন্ন দেশের সরকার। ভারতেও অক্সফোর্ডের উদ্ভাবিত ভ্যাকসিন উৎপাদনের প্রস্তুতি চলছে। অক্সফোর্ড ও চীনা ভ্যাকসিন বাংলাদেশকে সহজ শর্তে সরবরাহের প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করব, ভ্যাকসিন পাওয়ার জন্য সরকার উদ্ভাবক সংস্থাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখবে। এ ক্ষেত্রে দুর্নীতি যাতে মাথা চাড়া দিয়ে না ওঠে সে ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করা হবে। কেনার ক্ষেত্রে নিশ্চিত করতে হবে স্বচ্ছতা।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর