বুধবার, ২৬ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন

জাতিসংঘের দায়িত্বশীল ভূমিকা কাম্য

রোহিঙ্গা সমস্যা বাংলাদেশের জন্য বিষফোঁড়া হয়ে বিরাজ করছে অন্তত তিন দশক ধরে। গত তিন বছরে সে বিষফোঁড়া ক্যান্সারে রূপ নিয়েছে। শরণার্থী ক্যাম্পগুলোর নিবন্ধন অনুযায়ী বাংলাদেশে এখন ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। অনিবন্ধিত অবস্থায় বা পরিচয় লুকিয়ে বাংলাদেশে বসবাসকারী রোহিঙ্গার সংখ্যা আরও কয়েক লাখ হবে বলে অনুমান করা হয়। বাংলাদেশের অর্থনীতি ও পরিবেশের জন্য বিপদ সৃষ্টি করেছে মিয়ানমারের নাগরিকদের আশ্রয়দানের ঘটনা। মিয়ানমারের সেনা ও মিলিশিয়া বাহিনীর নিধনযজ্ঞের মুখে তিন বছর আগে নজিরবিহীন মানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করে সীমান্ত খুলে দিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার। তার পর থেকে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরণে সাধ্যের সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের কোষাগার থেকে রোহিঙ্গাদের পেছনে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১ লাখ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশে আশ্রয়ের জন্য আসা রোহিঙ্গাদের আরও ভালো থাকার সুযোগ সৃষ্টিতে শত শত বিদেশি সংস্থাকেও কাজ করার অবারিত স্বাধীনতা দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। সে সুযোগ কাজে লাগিয়ে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়ায় নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগ উঠেছে এনজিওগুলোর বিরুদ্ধে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অপতৎপরতায় অস্থায়ী ক্যাম্পগুলো চিরস্থায়ী করার অপচেষ্টাও চলছে জোরেশোরে। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে রোহিঙ্গারা এসে কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়। তাদের ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে গত বছরের আগস্টে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হলেও সংশ্লিষ্টদের অনীহার মুখে তা সম্ভব হয়নি। জাতিসংঘও চায় রোহিঙ্গাদের যেন জোর করে স্বদেশে ফেরত পাঠানো না হয়। আমরা জাতিসংঘের অভিলাষের বিষয়ে আপত্তি জানাতে চাই না।

তবে ঘনবসতির এই দেশে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার মতো বিলাসিতা কোনোভাবেই আমাদের থাকা উচিত নয়। এ দৃষ্টিকোণ থেকে জাতিসংঘের উচিত রোহিঙ্গাদের অন্য কোনো দেশে স্থানান্তর করা। এ ব্যাপারে বিশ্বসংস্থা দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবে এবং বাংলাদেশকে বিপর্যয়ের হাত

থেকে রেহাই করবে- এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর