বুধবার, ২৬ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

সিমেন্টশিল্পের দুরবস্থা

সংকট নিরসনের উদ্যোগ নিন

গত দুই যুগে দেশে সিমেন্টশিল্পের বিকাশ ঘটেছে অভাবনীয় দ্রুতগতিতে। স্বাধীনতার সময় দেশে সর্বসাকল্যে ছিল একটি মাত্র সিমেন্ট কারখানা। গত তিন দশকে আরও ৩৩টি সিমেন্ট কারখানা গড়ে ওঠায় এখন এ সংখ্যা ৩৪। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ ছিল সিমেন্টের ক্ষেত্রে আমদানিনির্ভর এবং খোলাবাজারে মানসম্মত সিমেন্ট পাওয়া ছিল দুষ্কর। আমদানিকারকদের কেউ কেউ অতিমুনাফার লোভে সিমেন্টের সঙ্গে মাটি মিশিয়ে তা বাজারজাত করত এমন অভিযোগ ছিল ওপেন সিক্রেট। দেশে পর্যাপ্তসংখ্যক সিমেন্ট কারখানা স্থাপিত হওয়ার পর সে দুর্ভাগ্যের অবসান ঘটে। বাংলাদেশের সিমেন্ট এখন রপ্তানি হচ্ছে ভারতসহ বিভিন্ন দেশে। করোনাকালে অবকাঠামোগত নির্মাণকাজে স্থবিরতা সৃষ্টি হওয়ায় দেশের সিমেন্টশিল্প এখন বিপাকে। মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দেখা দিয়েছে অগ্রিম আয়কর ও সিমেন্টের কাঁচামালের ওপর অধিমূল্যে শুল্কায়ন। বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছে দেওয়া চিঠিতে আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যের সঙ্গে সংগতি রেখে সিমেন্ট উৎপাদনের কাঁচামাল ক্লিংকারের শুল্কায়নযোগ্য মূল্য এনবিআর কর্তৃক নির্ধারিত ৫০ মার্কিন ডলারের পরিবর্তে প্রোফরমা ইনভয়েসের সঙ্গে সংগতি রেখে ৩৮ থেকে ৪০ মার্কিন ডলার নির্ধারণের যৌক্তিকতা তুলে ধরেছে। তাদের দাবি, অগ্রিম আয়কর বা এআইটি ৩ শতাংশ চূড়ান্ত দায় থেকে অব্যাহতি বা ফেরতযোগ্য নিশ্চিত করা হোক। অগ্রিম আয়কর বাবদ যে অর্থ সিমেন্টশিল্প মালিকরা জমা দিচ্ছেন তা প্রকৃত আয়কর থেকে অতিরিক্ত প্রদান করা হলে ফেরত দেওয়া হোক। পত্রে আরও বলা হয়, উল্লিখিত তিনটি বিষয়ের যৌক্তিকতা থাকা ও এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সাক্ষাৎ, আবেদন-নিবেদন করা সত্ত্বেও কোনো কিছু মূল্যায়ন করা হয়নি। ফলে সিমেন্টশিল্প দিনের পর দিন লোকসান দিয়ে কোনোরকম টিকে থাকছে। ইতোমধ্যে কিছু শিল্প বন্ধ হয়ে গেছে। আরও কিছু বন্ধ হওয়ার দ্বারপ্রান্তে। সিমেন্টশিল্পের দুরবস্থার যে চিত্র অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে তুলে ধরা হয়েছে তা উদ্বেগজনক। আমাদের বিশ্বাস, অস্তিত্বের স্বার্থে এ শিল্পের সংকট নিরসনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। সম্ভাবনাময় সিমেন্টশিল্প টিকিয়ে রাখতে নেওয়া হবে বাস্তবমুখী পদক্ষেপ।

 

 

সর্বশেষ খবর