শনিবার, ২৯ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

এখন পুনর্বাসনের পালা

কৃষকের পাশে দাঁড়াতে হবে

বাংলাদেশকে বলা হয় প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ। শত শত বছর ধরে এ দেশের মানুষ বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, টর্নেডো, জলোচ্ছ্বাসের সঙ্গে লড়াই করে টিকে আছে। এ বছর ঘূর্ণিঝড়, টর্নেডো, বন্যার পাশাপাশি করোনাভাইরাস আঘাত হেনেছে পদ্মা, মেঘনা, যমুনা বিধৌত জনপদে। দেড় মাসের টানা বন্যায় নষ্ট হয়ে গেছে জমির ধান, পাট, ভুট্টাসহ সব ধরনের সবজি। করোনার পাশাপাশি বন্যায় নিঃস্ব হয়েছে কৃষক। ফসলের ক্ষতির ঢেউ এসে লেগেছে রাজধানীর কাঁচাবাজার পর্যন্ত। বেড়ে গেছে কাঁচা মরিচ ও সব ধরনের তরিতরকারির দাম। বন্যার পানি নামতেই আশায় বুক বেঁধে প্লাবিত জমিতে ফের বীজ বুনছে কৃষক। অনেক এলাকায় কাদা ফুঁড়ে বেরিয়েছে কচি ধানের শীষ। কৃষি পুনর্বাসনে সরকার আগেভাগে পদক্ষেপও নিয়েছে। কৃষি বিভাগ থেকে বিতরণ করা হচ্ছে বীজ, সারসহ নানা কৃষি উপকরণ। পর্যায়ক্রমে সব কৃষককে বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় কৃষি উপকরণ দেওয়ার ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর। বর্তমানে পদ্মা ছাড়া সব প্রধান নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে। পানি অব্যাহতভাবে হ্রাস পাওয়ায় দেশের অধিকাংশ এলাকার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। সরকারের হিসাবে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি করেছে এ বছরের বন্যা। এখন কৃষি পুনর্বাসন দ্রুততর করে ক্ষয়ক্ষতি কিছুটা হলেও কাটিয়ে ওঠার উদ্যোগ নিতে হবে। কৃষকের পাশে ছুটে যেতে হবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মীদের। কৃষি প্রণোদনায় সরকারকে উদার হতে হবে। দেশের কৃষক ক্ষুদ্র আয়তনের এ দেশের ১৭ কোটি মানুষকে অন্ন জুগিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছে। পৃথিবীর অন্যতম ঘনবসতির এ দেশে গত পাঁচ দশকে জনসংখ্যা আড়াই গুণ বেড়েছে এবং কৃষিজমি অনুমিত হিসাবে ২৫ শতাংশের বেশি কমলেও খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে তিন গুণ। এটি সম্ভব হয়েছে কৃষকের কঠোর পরিশ্রমের মনোভাব এবং মাটি ও মানুষের প্রতি ভালোবাসার কারণে। কৃষি পুনর্বাসনে সফল হলে কৃষকের পক্ষে বন্যাজনিত ক্ষয়ক্ষতির একাংশ পূরণ করা সম্ভব হবে। দেশের মানুষ রক্ষা পাবে খাদ্যাভাব থেকে। ফলে কৃষি পুনর্বাসনে কোনো ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও অসততা যাতে মাথা চড়া দিয়ে না ওঠে সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর