শনিবার, ২৯ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

ক্রাইস্টচার্চ হামলা

অপরাধীর সর্বোচ্চ সাজা প্রশংসনীয়

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ এলাকার দুই মসজিদে ঢুকে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ৫১ জনকে হত্যার দায়ে অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক ব্রেন্টন ট্যারেন্টকে প্যারোলবিহীন আমৃত্যু কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। বৃহস্পতিবার হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করে নিউজিল্যান্ডের আদালত বলেছে, ব্রেন্টন ট্যারেন্ট যা করেছেন তা মানুষের কাজ নয়। নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে প্যারোল ছাড়া আমৃত্যু বা যাবজ্জীবন কারাদন্ডের শাস্তি দেওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম। আমৃত্যু কারাদন্ডই দেশটির আইনে সর্বোচ্চ সাজা। দেশটির বিচারব্যবস্থায় মৃত্যুদন্ডের বিধান নেই। ব্রেন্টনের আমৃত্যু কারাদন্ডে ওই হামলায় ভুক্তভোগী বাংলাদেশি ও স্বজন হারানো ব্যক্তিরা মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। ২০১৯ সালের ১৫ মার্চ জুমার নামাজের সময় ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে বন্দুক হামলা চালান ২৯ বছরের ব্রেন্টন। এতে পাঁচ বাংলাদেশিসহ ৫১ জন নিহত হন; আহত হন অন্তত ৪০ জন। শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদী ব্রেন্টন তার বিরুদ্ধে আনা সন্ত্রাসবাদের অভিযোগের দায় স্বীকার করেন আদালতে। তাকে নিয়ে বিচারক মন্তব্য করেন, ‘ওই হামলা ছিল অমানবিক এবং হামলার সময় ব্রেন্টন কোনো দয়া দেখাননি।’ রায় ঘোষণার পর নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন বলেন, তিনি আশা করছেন, ওই সন্ত্রাসীর নাম উচ্চারণ কিংবা তা শোনার আজই শেষ দিন। রায় ঘোষণার পর আদালতের বাইরে উল্লাস করেন মুসলিম-অমুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যরা। ব্রেন্টন হামলার আগে অনলাইনে এক বিশাল ঘোষণাপত্র প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি আগ্নেয়াস্ত্র বেছে নিয়েছি, কারণ তা সমাজ উন্মোচনে প্রভাব ফেলবে, গণমাধ্যমে কাটতি বাড়াবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিকে প্রভাবিত করবে, আর এর ফলে সারা বিশ্বের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে প্রভাব পড়বে।’ তার হামলা মানব ইতিহাসে কলঙ্ক লেপন করেছে। বিচার প্রক্রিয়া চলাকালে তাকে নিরাসক্ত ও নীরব দেখা যায়। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত তাকে নিজের বক্তব্য উপস্থাপনের সুযোগ দিলেও তিনি কোনো কথা বলেননি। নিউজিল্যান্ডের বিচারব্যবস্থা ব্রেন্টনের রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচারের অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর