শিরোনাম
রবিবার, ৪ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

ধর্ষণের প্রতিরোধ ও প্রতিকারের নির্দেশ দেয় ইসলাম

মাহমুদুল হক জালীস

ধর্ষণের প্রতিরোধ ও প্রতিকারের নির্দেশ দেয় ইসলাম

ইসলামে ধর্ষণ একটি মহাপাপ। ঘৃণ্য মানসিকতা-সম্পন্ন কাজ ও মহা অন্যায়। কারণ ধর্ষণের ক্ষেত্রে এক পক্ষ থেকে ব্যভিচার সংঘটিত হয়। বিপরীত পক্ষ হয় নির্যাতিত, নিপীড়িত। তাই নিপীড়িত ব্যক্তির কোনো অন্যায় নেই। নেই কোনো সাজাও। শাস্তি কেবল অত্যাচারী ধর্ষকের হবে। যে কিনা নিজের লালসা চরিতার্থের জন্য অন্যের ক্ষতি করেছে। ধর্ষণের মতো গর্হিত কাজে লিপ্ত হয়েছে। আর ধর্ষকের শাস্তি ইসলামী শরিয়তে ব্যভিচারের শাস্তির অনুরূপ। এ সম্পর্কে কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘ব্যভিচারিণী নারী ব্যভিচারী পুরুষ, তাদের প্রত্যেককে ১০০ করে বেত্রাঘাত কর। আল্লাহর বিধান কার্যকরে তাদের প্রতি যেন তোমাদের মনে দয়ার উদ্রেক না হয়, যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি ও পরকালের প্রতি বিশ্বাসী হয়ে থাক। মুসলমানদের একটি দল যেন তাদের শাস্তি প্রত্যক্ষ করে।’ সুরা নুর, আয়াত ২। এ প্রসঙ্গে হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘অবিবাহিত নারী-পুরুষের ক্ষেত্রে শাস্তি ১০০ বেত্রাঘাত এবং এক বছরের জন্য দেশান্তর। আর বিবাহিত পুরুষ-নারীর ক্ষেত্রে ১০০ বেত্রাঘাত ও রজম (পাথর মেরে মৃত্যুদন্ড)।’ মুসলিম।

ইসলামী আইনশাস্ত্রে ব্যভিচার সুস্পষ্ট হারাম। জঘন্যতম অপরাধ। এ সম্পর্কে কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর তোমরা ব্যভিচারের কাছেও যেও না। নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ ও মন্দ পথ।’ সুরা আল ইসরা, আয়াত ৩২।

ইসলামে ধর্ষণের শাস্তি কী? সে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে হাদিস। হজরত ওয়াইল ইবনে হুজর (রা.) বর্ণনা করেন, ‘রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে এক মহিলাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করা হলে তিনি ধর্ষিতাকে কোনোরূপ শাস্তি দেননি, তবে ধর্ষককে হদের (কোরআন-হাদিসে বহু অপরাধের ওপর শাস্তির কথা আছে। এর মধ্যে যেসব শাস্তির পরিমাণ ও পদ্ধতি কোরআন-হাদিসে সুনির্ধারিত তাকে হদ বলে) শাস্তি দেন।’ ইবনে মাজাহ। অন্য এক বর্ণনায় এসেছে, ‘একদা সরকারি মালিকানাধীন এক গোলাম গনিমতের পঞ্চমাংশ পাওয়া এক দাসীর সঙ্গে জবরদস্তি ব্যভিচার (ধর্ষণ) করে। এতে তার কুমারিত্ব নষ্ট হয়ে যায়। তখন হজরত ওমর (রা.) ওই গোলামকে বেত্রাঘাত করেন এবং নির্বাসন দেন। কিন্তু দাসীটিকে সে বাধ্য করেছিল বলে তাকে বেত্রাঘাত করেননি।’ বুখারি।

যদি কোনো নারী ধর্ষণের শিকার হয়, তাহলে তার সর্বপ্রথম করণীয় হলো, সম্ভব হলে তা প্রতিরোধ করবে। এমনকি যদিও তা ধর্ষণকারীকে হত্যা করার মতো পরিস্থিতি তৈরি করে, তাতেও ইসলাম সায় দিয়েছে। এ সম্পর্কে ইমাম আহমদ (রা.) এক নারীর ব্যাপারে বলেন, ‘যদি সেই নারী জানতে পারে যে, এই ব্যক্তি তাকে উপভোগ করতে চাচ্ছে আর আত্মরক্ষার্থে মেয়েটি তাকে মেরে ফেলে; তবে সেই নারীর ওপর কোনো দায় আসবে না।’ আল মুগনি।

লেখক : মুহাদ্দিস, খাদিমুল ইসলাম মাদ্রাসা, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর