মানুষের ভোটের অধিকারের সুরক্ষা দিতে অসমর্থ নির্বাচন কমিশ্নের ভাবমূর্তি এমনিতেই বেশ মলিন। এখন তার সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েছে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রকল্পের দুর্নীতি রোধ করতে না পারা। এমনকি বড় ধরনের দুর্নীতি যা চিহ্নিত হয়েছে, সে বিষয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেও তারা দুর্বলতার পরিচয় দিয়ে চলেছে। সুতরাং পরিচয়পত্রবিষয়ক শুধু দুর্নীতি রোধ বা জাল-জালিয়াতি বন্ধ করাই নয়, জাতীয় পরিচয়পত্র প্রকল্পের ব্যবস্থাপনাকে সম্পূর্ণ নতুন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে মূল্যায়ন করার সময় এসেছে। জাতীয় পরিচয়পত্র জালিয়াতি, সংশোধন, দ্বৈত ও রোহিঙ্গাদের ভোটার করার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে নির্বাচন কমিশ্নের শীর্ষ কর্মকর্তাদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সার্চ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশ্নের চার কর্মকর্তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পেয়েছে একটি সংস্থা। যে কোনো সময় তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হতে পারে। সূত্র জানিয়েছেন, ওই চার কর্মকর্তার আরও কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আছে কিনা, তারা কার কার নামে সম্পদ করেছেন, সেসব বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে বিভিন্ন সংস্থা। জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) অনুবিভাগে শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছে নির্বাচন কমিশ্ন। ইসিসূত্র বলছেন, তারা এনআইডি উইং নিয়ে অনেক পরিকল্পনা করেছেন। ইতিমধ্যে কয়েকজন অফিসারকে পরিবর্তন করা হয়েছে। এসব অপরাধ তদন্তে নেপথ্যের বড় বড় কর্মকর্তা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। ভোট ও ভোটার হওয়ার সঙ্গে চলমান রাজনীতির একটা প্রত্যক্ষ যোগ থাকে। একদা ১ কোটির বেশি ভুয়া ভোটার কমিশ্নের নেতৃত্বেই সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু ভোটার তালিকার গলদের থেকে পরিচয়পত্রের গলদ অনেক বেশি বিধ্বংসী। সার্বিক বিষয় পর্যালোচনায় প্রতীয়মাণ হয়, ভোটার তালিকা তৈরি এবং জাতীয় পরিচয় নিবন্ধনের পুরো দায়িত্ব নির্বাচন কমিশ্নের কাঁধে ন্যস্ত রাখাটা সমীচীন কিনা, তা একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। ইসির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। নিশ্চিত করতে কঠোর শাস্তি।