প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বল্প সময়ে স্বল্প খরচে বিচার পাওয়াকে মানুষের অধিকার বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি দীর্ঘসূত্রতা কমিয়ে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য আইনজীবীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বুধবার ঢাকা জেলার নবনির্মিত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভবন উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ এবং জনগুরুত্বের দাবিদার। বিলম্বিত বিচার যে বিচারহীনতার নামান্তর এ বিষয়ে সাধারণ মানুষ, সরকার, বিচারক এবং আইনজীবীদের মধ্যে কোনো দ্বিমত নেই। কিন্তু আমাদের দেশে যুগের পর যুগ ধরে প্রলম্বিত বিচারের মাধ্যমে বিচারব্যবস্থার সৌন্দর্য ক্ষুণ্ন করা হচ্ছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বছরের পর বছর মামলা চালিয়ে মামলার রায় পাওয়ার আগেই বিচারপ্রার্থীর জীবনপ্রদীপ নিভে যাচ্ছে। মামলা পরিচালনায় সাধ্যের বাইরে খরচ করতে গিয়ে সর্বস্ব হারিয়েছেন এমন মানুষও অসংখ্য। যে বিষয়টি মানুষের বিচার পাওয়ার অধিকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। গুরুত্বপূর্ণ এমন একটি বিষয়ে সরকারপ্রধানের মনোযোগ প্রশংসার দাবিদার। প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে আদালতের রায় বাংলায় লেখার ওপরও গুরুত্বারোপ করেছেন। এ ক্ষেত্রে তিনি প্রয়োজনে অনুবাদক নিয়োগদানের ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিচার বিভাগের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, রায় যদি কেউ বাংলায় লিখতে না পারেন, ইংরেজিতে লেখেন তাতে কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু সে রায়টা বাংলায় অনুবাদ করে যেন প্রচার করা হয়, সে ব্যবস্থাটা করে দিতে হবে। আমাদের দেশে মামলার রায় ইংরেজিতে দেওয়া হয়। অনেকে সে রায়টা বুঝতে না পারায় আইনজীবীরা যেভাবে বোঝান সেভাবে তাদের বুঝতে বা জানতে হয়। বিচারকরা দীর্ঘদিন যাবৎ ইংরেজিতে লিখতে লিখতে অনেকে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন, তাই বাংলাতেই রায় লিখতে হবে- এ ধরনের চাপ প্রয়োগ ঠিক নাও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে তা অনুবাদের ব্যবস্থা করতে হবে। দেশে অনেক পেশাদার অনুবাদকও আছেন। প্রয়োজনে অনুবাদকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া যেতে পারে। প্রধানমন্ত্রী স্বল্প সময়ে বিচার পাওয়াকে মানুষের অধিকার বলে অভিহিত করেছেন। এ অধিকার নিশ্চিত করার বিষয়ে আইনজীবীদের সদিচ্ছা ও সহযোগিতার বিকল্প নেই। বিচারকদের দৃঢ়প্রত্যয়ী ভূমিকাও প্রত্যাশিত।