দেশে পিঁয়াজ নিয়ে আবারও একটা সমস্যার উদ্ভব ঘটতে চলেছে। এবারের সমস্যাটি পিঁয়াজের ভোক্তাদের জন্য নয়; এ দেশের পিঁয়াজ চাষিদের সামনে বড় ধরনের লোকসানের ঝুঁকি সৃষ্টি হচ্ছে। ভারত সরকার সম্প্রতি পিঁয়াজ রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ায় ভারতীয় পিঁয়াজ দেশে আসা শুরু করেছে। প্রশ্ন জাগতে পারে, এতে সমস্যা কোথায়? দেশে পণ্য আমদানি-রপ্তানি তো স্বাভাবিক বাণিজ্যিক প্রক্রিয়া। ভারতীয় পিঁয়াজ বাংলাদেশে আমদানি হলে আমাদের সমস্যা হবে কেন? বরং গত বছর ও তার আগের বছর ভারত নিজেদের বাজার সামাল দিতে রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করলে আমরা পিঁয়াজ-সংকটে পড়েছিলাম। অন্যদিকে তুরস্ক থেকে আমদানি করা পিঁয়াজের বস্তায় অর্ধেকই মিলেছে পাথর! কোনো কোনো পাথরের টুকরোর আকার পিঁয়াজের চেয়ে বড়। সম্প্রতি দেশটি থেকে প্রায় ৪০ টন পাথর মেশানো পিঁয়াজ আসে চট্টগ্রাম বন্দরে। এসব পিঁয়াজ নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা। ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাব বলছে, আমদানির নামে মানি লন্ডারিং করতেই এমন কারসাজি কি না খতিয়ে দেখা জরুরি। চলতি বছরের শুরুতে ভারত থেকে নতুন করে পিঁয়াজ আমদানি শুরু হয়। তবে দেশটির স্থানীয় বাজারে পিঁয়াজের দাম বেশি হওয়ায় অনেকে এখনো আমদানি করছেন তুরস্কের পিঁয়াজ। দেশীয় খুচরা ব্যবসায়ীরা আমদানি পিঁয়াজ নিয়ে অসন্তোষ দেখিয়েছেন। তারা পাথরসহ পিঁয়াজ ফেরত দিচ্ছেন। আমদানি-রপ্তানির বিপরীতে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচারের খবর প্রায়ই উঠে আসে শুল্ক গোয়েন্দার প্রতিবেদনে। তা ছাড়া বাজারে আসা দেশি পিঁয়াজের বর্তমান জাতটি সংরক্ষণ করা যায় না। দাম কম দেখে পিঁয়াজ ধরে রাখার সুযোগ কৃষকের নেই। চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হলে পিঁয়াজ চাষে তারা আগ্রহ হারাবেন। এ পরিস্থিতিতে দেশের পিঁয়াজ চাষিদের স্বার্থে বাজারের সুরক্ষা প্রয়োজন। এখন পিঁয়াজ আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক বাড়িয়ে দেশি পিঁয়াজ চাষিদের সুরক্ষার যে দাবি উঠেছে কৃষকের তরফ থেকে সরকারের উচিত তা আমলে নেওয়া।