নেক আমলের জন্য সর্বাধিক প্রয়োজন হচ্ছে দীনি ইলম অর্জন। কেননা ইলম ছাড়া আমলের সঠিক রূপরেখা নির্ধারণ সম্ভব নয়। এ কারণেই কোরআন ও হাদিসে ইলম অর্জনের প্রতি সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। এক হাদিসে বলা হয়েছে, ‘তোমাদের মধ্যে তারাই সর্বোত্তম যারা কোরআন শেখে এবং শিক্ষা দেয়।’ অন্য এক হাদিসে ওলামায়ে কিরামকে রসুলের উত্তরাধিকারী বলা হয়েছে এবং তাদের বে-ইলম আবেদের ওপর অত্যধিক প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
ইলমের গুরুত্বের বিষয়টি অনুধাবনের জন্য রসুলের নবুয়ত প্রাপ্তির ঘটনাটি লক্ষণীয়। সমাজের অব্যাহত অরাজকতা ও অসভ্যতার কারণে রসুলে পাক যখন গারে হেরায় নির্জনে সময় কাটাচ্ছিলেন ঠিক এই মুহূর্তে হঠাৎ একদিন ফেরেশতা জিবরিল আলাইহিস সালাম সেখানে হাজির হয়ে রসুলের বক্ষ বিদারণ করে তা উন্মুক্ত করে তাতে জমজমের পানি সংযোজন করলেন। বর্তমান অত্যাধুনিক যুগে এখানে বিস্ময়ের কোনো কিছু নেই। কেননা বর্তমানে হার্ট অপারেশন চিকিৎসাবিজ্ঞানের সাক্ষ্য বহন করছে উৎকর্ষের। বিজ্ঞানীরা তাদের এ কলাকৌশল আল কোরআন এবং রসুলের হাদিস থেকে আবিষ্কার করেন। বিধায় রসুলকে মহাবিজ্ঞানীও বলা হয়। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস! মুসলমানরা তাদের ঘরের বস্তু বিধর্মীদের কাছ থেকে ভিক্ষা করে গৌরববোধ করে। সে যাই হোক, হজরত জিবরিল আলাইহিস সালাম রসুলের বক্ষ বিদীর্ণ করে তাতে জমজমের পানি সংযোজন করলেন। কিন্তু এর কারণ কী ছিল?
রসুলের বক্ষকে জমজমের পানির দ্বারা ধুয়ে বক্ষস্থিত নফসে আম্মারা নির্মূল করা হয়েছে বলে ফাতহুল বারি, উমদাতুল কারিসহ বিভিন্ন কিতাবে উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু হজরত ইবনে হাজর আসকালানি ও আল্লামা ইবনে আরাবির (রহ.) মতো বিজ্ঞ হাদিসবিশারদরাও এর সপক্ষে সুনিশ্চিত প্রমাণ পেশ করা থেকে নীরব রয়েছেন।অন্যপক্ষে এ ব্যাখ্যা বর্তমান যুগের অনেক চিন্তাবিদের জন্য বিশ্বরসুল সম্পর্কে কটূক্তির পথ সুগম করেছে। কারণ যদি উক্ত উদ্দেশ্যেই তখন বক্ষ বিদারণের প্রয়োজন দেখা দেয়, তাহলে ইতিপূর্বে একাধিকবার সিনা চাকের কি প্রয়োজন ছিল? তাহলে কি তার অন্তর এত অধিক পরিমাণে আবর্জনাযুক্ত ছিল যে বারবার সিনা চাক করার প্রয়োজন হয়েছে। উপরোক্ত ব্যাখ্যায় বিশ্বরসুলের ব্যাপারে এ-জাতীয় বিভ্রান্তিমূলক প্রশ্নের অবতারণা হতে পারে বিধায় তা গ্রহণযোগ্য নয়।
লেখক : আমির, আল হাইআতুল উলয়া ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ।