ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের পৈশাচিক বিমান হামলায় বুধবার পর্যন্ত শত শত মানুষ নিহত হয়েছে। আহতের সংখ্যা আরও বিপুল। লাগাতার বিমান হামলায় ইতিমধ্যে বাস্তুচ্যুত হয়েছে ৫২ হাজারের বেশি মানুষ। ইসরায়েলি বাহিনীর দাবি অনুযায়ী বুধবার মাত্র আধা ঘণ্টায় তারা গাজা উপত্যকায় ১২২টি শক্তিশালী বোমা ফেলেছে। জাতিসংঘের ভাষ্য, বিমান হামলায় ৫২ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুতই শুধু নয়, ধ্বংসযজ্ঞের শিকার হয়েছে সাড়ে চার শ ভবন। যুক্তরাজ্যের লন্ডনভিত্তিক বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ইসরায়েল যেভাবে ফিলিস্তিনের আবাসিক এলাকায় বিমান হামলা চালিয়েছে তা যুদ্ধাপরাধের শামিল বলে অভিহিত করেছে। গাজায় জাতিসংঘের পরিচালিত স্কুল রয়েছে ৫৮টি। এতে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ৪৭ হাজার ফিলিস্তিনি। ইসরায়েলের বিমান হামলায় ১৩২টি ভবন ধ্বংস হয়েছে। এ ছাড়া ৩১৬টি ভবন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ছয়টি হাসপাতাল ও নয়টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র রয়েছে। হামলার কারণে সুপেয় পানির সংকটে পড়েছে প্রায় আড়াই লাখ গাজাবাসী। ইসরায়েলের অভিযোগ, ফিলিস্তিনির সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো এ পর্যন্ত সাড়ে ৩ হাজার রকেট ছুড়েছে। এ হামলার জবাবে তারা যে বিমান হামলা চালিয়েছে তাতে ১৬০ জন হামাস ও অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্য নিহত হয়েছে। পশ্চিম তীরে ইহুদি বসতি স্থাপনের অপসিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে ফিলিস্তিনিরা। পুলিশ বিক্ষোভ দমনে গুলিবর্ষণ করে এবং তাতে হতাহতের ঘটনা ঘটে। পশ্চিম তীরে নতুন করে ইহুদি বসতি গড়ার অপচেষ্টার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশ। কিন্তু গাজা থেকে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে হামাস বৃষ্টির মতো রকেট বর্ষণ শুরু করলে জায়নবাদীদের পায়ের তলায় মাটি আসে। তারা উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপিয়ে গাজায় ঢালাওভাবে বিমান হামলা শুরু করে। এ ব্যাপারে জাতিসংঘের নির্বিকার ভূমিকা এ বিশ্বসংস্থার প্রয়োজনীয়তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে। বিশ্বশান্তির জন্য যা অশনিসংকেত বইকি। মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বশান্তির স্বার্থে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল বিরোধের গ্রহণযোগ্য নিষ্পত্তির বিকল্প নেই।