বাংলাদেশকে বলা হয় সবুজের দেশ। এক সময় দেশের যে কোনো প্রান্তে দাঁড়ালেই চোখ জুড়ে যেত সবুজের সমারোহে। নিজেদের অবিবেচনাপ্রসূত কর্মকান্ডে দেশ থেকে সবুজের আভা ক্রমশ নিষ্প্রভ হয়ে পড়েছে। নগরায়ণের নামে কাটা হয়েছে একের পর এক গাছ। দেশের প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যে তা ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি করেছে। আশার কথা দেশের সবুজ বৃক্ষরাজি যে আমাদের অস্তিত্বের অনুষঙ্গ সে বিষয়ে মানুষ ক্রমান্বয়ে সচেতন হয়ে উঠছে। বৃক্ষ শুধু সবুজের বিস্তার ঘটায় না, বাতাস থেকে শুষে নেয় কার্বন-ডাই-অক্সাইড। বৃক্ষ যে ফল দেয় তা নিজেদের চাহিদাই শুধু মেটায় না জীবিকারও উৎস হয়ে দেখা দেয়। বর্তমান সরকারের আমলে বৃক্ষ রোপণকে আন্দোলনে পরিণত করার প্রশংসনীয় প্রচেষ্টা চলছে। তবে এ বিষয়ে সরকারের যে রাজনৈতিক অঙ্গীকার রয়েছে তার বাস্তবায়ন পর্যায়ে রয়েছে নিদারুণ গাফিলতি। তারপরও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ব্যাপক মানুষের মধ্যে আগ্রহ সৃষ্টি করায় গত এক যুগে বৃক্ষ নিধনের বদলে বৃক্ষ রোপণের প্রবণতা তুলনামূলকভাবে বেড়েছে। জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান-২০২১ উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নিজেদের স্বার্থেই আমাদের পরিবেশ রক্ষা করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হলে সবুজ বাংলাকে আরও সবুজ করতে হবে। এ জন্য যে যেখানে যতটুকু জায়গা পান অন্তত গাছ লাগান। তিনটি করে গাছ লাগাতে পারলে সব থেকে ভালো। আর তা সম্ভব না হলে অন্তত একটি গাছ লাগালেও লাগাতে হবে। গাছ লাগানোর পাশাপাশি গাছের যত্ন নেওয়ারও পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু লাগালে হবে না, গাছটি যাতে টিকে থাকে সে জন্য যত্ন করতে হবে। গাছ ফল দেবে অথবা কাঠ দেবে অথবা আপনাদের ওষুধ দেবে। কাজেই আসুন আমরা সবাই মিলে ব্যাপকভাবে সারা দেশে বৃক্ষরোপণ করি এবং আমাদের সোনার বাংলাকে আরও সোনার সবুজ বাংলা করি। সরকারের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির ফলে দেশের ২২ ভাগ এলাকায় ইতিমধ্যে বনায়ন সৃষ্টি হয়েছে। নিজেদের স্বার্থে দেশকে আরও সবুজে পরিণত করতে যত্নবান হতে হবে।