করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বৃহস্পতিবার ভোরে দেশে শুরু হয়েছে সাত দিনের ‘কঠোর’ লকডাউন। ‘সর্বাত্মক লকডাউনে’ সরকারি বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তাদানে সারা দেশে মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনী। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় মাঠপর্যায়ে কাজ করছেন ১০৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গাড়ি টহলে রয়েছে। সবাইকে ঘরে থাকার অনুরোধের পরও উৎসাহী মানুষ ঘরের বাইরে বের হয়। রাজধানীতে এমন ১ হাজার ১৫৩ জন পুলিশের হাতে আটক হন। এর মধ্যে ৫৫০ জনকে দেখানো হয়েছে গ্রেফতার। অন্যদের মুচলেকা ও আর্থিক জরিমানা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। সর্বশেষ জারি করা আদেশ অনুযায়ী বৃহস্পতিবার থেকে পুরোপুরি বন্ধ আছে সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস। সড়ক, রেল ও নৌপথে চলাচল বন্ধ। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও কাঁচাবাজার সকাল ৯টা থেকে বিকাল পর্যন্ত ৫টা খোলা। রাজধানীর ফাঁকা সড়কে জরুরি গাড়ি চলছে। ব্যক্তিগত কিছু গাড়ির স্থান হয়েছে পুলিশের রেকারে। প্রধান সড়কে কড়াকড়ি দেখা গেলেও অলিগলি কিংবা রাজধানীর বাইরে সারা দেশের পাড়া-মহল্লার দৃশ্য ছিল উল্টো। অলিগলিতে বেশ জমে ছিল চায়ের কাপের আড্ডা। স্বাস্থ্যবিধি না মেনে কাঁচাবাজারে ছিল মানুষের ভিড়। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে অনেকের উপস্থিতি ছিল। বিশেষজ্ঞদের মতে কার্যকর লকডাউনে দৈনিক শনাক্তের হার প্রায় ২৬ শতাংশ থেকে ১০-১৫ শতাংশে নেমে আসবে। এদিকে সংক্রমণের বিস্তার রোধ করা সম্ভব হয়নি। আবার প্রত্যাশিত সংখ্যায় টিকাও দেওয়া যায়নি। মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে হেলাফেলা করছে। দেশের আর্থসামাজিক অবস্থা ও মানুষের জীবিকার প্রশ্নে দীর্ঘ লকডাউন নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। সরকারি খাদ্য ও আর্থিক সহায়তা তদারকির অভাবে দরিদ্র জনগোষ্ঠী যথাযথ পাচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনকে আরও আন্তরিক হতে হবে। কঠোরভাবে লকডাউন মেনে চলতে দেশের মানুষ সহযোগিতা করবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।