রবিবার, ১৮ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

চালের দামে ঊর্ধ্বগতি

মিল মালিকদের নিরস্ত করুন

মাথার  ঘাম পায়ে ফেলে ধান উৎপাদন করে চাষি। ধার-দেনা করেই বেশির ভাগ চাষিকে সংগ্রহ করতে হয় বীজ ও চাষাবাদের উপকরণ। বন্যা বা ঘূর্ণিঝড় হলে সে বছর ধান ঘরে তোলা কঠিন হয়ে পড়ে অনেক চাষির পক্ষে। উপোস থাকার পাশাপাশি ধার শোধ নিয়ে তাকে অস্থিরতায় ভুগতে হয়। সরকার ধান চাষে কৃষককে কম দামে সার সরবরাহ করে। সেচ ও কীটনাশকের ক্ষেত্রেও দেওয়া হয় ভর্তুকি। কিন্তু সে সুফল আদৌ চাষিরা ভোগ করেন কি না তা একটি প্রশ্নবিদ্ধ বিষয়। এমনকি যে যাদের ট্যাক্সের টাকায় সার সেচ কীটনাশকসহ নানা ক্ষেত্রে ধান চাষিদের ভর্তুকি দেওয়া হয় সে দেশবাসীও এর সুফল পান না এমন অভিযোগই প্রবল। কারণ চালের বাজার এখন পুরোপুরি একশ্রেণির মিল মালিক নামের সাইলকের নিয়ন্ত্রণে। সরকার ধান চাষিদের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে প্রতি বছর লাখ লাখ মণ ধান-চাল সংগ্রহ করে। সরকারের ধান-চাল সংগ্রহ কর্মসূচিতেও প্রকৃত অর্থে লাভবান হয় চাল মিল মালিকরা। কারণ চাল কেনা হয় তাদের থেকে, ধান চাষিদের থেকে নয়। ধান চাল কলগুলোয় ওঠার পরই শুরু হয় সাধারণ ক্রেতাদের জিম্মি করার অপখেলা। চলতি বছর রেকর্ড পরিমাণ ধান উৎপাদন সত্ত্বেও ভরা মৌসুমে চালের দাম বাড়ছে মিল মালিকদের কারসাজিতে। এর ফলে নিম্ন আয়ের মানুষের জীবন চরম দুর্বিষহ অবস্থায় পড়েছে। দেড় বছর ধরে দেশজুড়ে চলছে করোনার মহামারী। লাখ লাখ মানুষ কর্মহীন। বিশেষ করে হতদরিদ্র মানুষের পক্ষে খেয়ে-পরে বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় চালের মূল্যবৃদ্ধি তাদের অনাহার আর অর্ধাহারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। বিশ্ববাজারে চালের দাম যখন পড়তির দিকে, দেশে চাহিদার চেয়ে বেশি চাল মজুদ থাকা সত্ত্বেও মূল্যবৃদ্ধি অপ্রত্যাশিতই শুধু নয়, দুর্ভাগ্যজনকও। মূল্যবৃদ্ধির অপকর্মের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের নিরস্ত করতে সরকার কঠোর পদক্ষেপ নেবে আমরা এমনটিই দেখতে চাই। আশা করি চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে মিল মালিকদের অশুভ সিন্ডিকেট ভাঙতে প্রশাসন কড়া হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর