করোনাভাইরাস নামের ভয়াল দৈত্য বিশ্বের ৭০০ কোটি মানুষকে জিম্মি করে ফেলেছে। এ জিম্মি অবস্থা থেকে রক্ষা পাওয়ার দুটি মাত্র পথ খোলা। এর একটি হলো টিকা গ্রহণের মাধ্যমে ওই দৈত্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নিজের শক্তি বাড়ানো। তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ পথ হলো করোনা যাতে কোনোভাবে থাবা বিস্তার করতে না পারে তা নিশ্চিতকরণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। বিশেষ করে অন্য মানুষের ধারেকাছে যাওয়ার আগে মাস্ক ব্যবহার করা। করোনাভাইরাসের টিকা সংগ্রহে আগেভাগে পদক্ষেপ নিলেও ভারত টিকা রপ্তানি বন্ধ করায় বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ। তারপর চীনসহ অন্যান্য উৎস থেকে টিকা আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়। চীন সরকারের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি অনুযায়ী সে দেশ থেকে বাল্ক এনে বাংলাদেশেই উৎপাদন করা হবে সিনোফার্মের টিকা। গত সোমবার সম্পাদিত চুক্তির ফলে বাংলাদেশের চাহিদা অনুযায়ী টিকা প্রাপ্তির সুযোগ বাড়বে। চুক্তি সম্পর্কে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ভাষ্য, আগামী তিন মাসের মধ্যে দেশে সিনোফার্মের টিকা উৎপাদন সম্ভব হবে। প্রতি মাসে ৪ কোটি ডোজ টিকা তৈরির সক্ষমতা রয়েছে চুক্তি সম্পাদনকারী প্রতিষ্ঠান ইনসেপ্টার। তবে এ টিকার দাম এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ অর্থাৎ ১৩ কোটি মানুষকে ২৬ কোটি ডোজ টিকা দিতে হবে। সরকারিভাবে করোনাভাইরাসের টিকা উৎপাদনের আভাসও দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। বলেছেন, এর ফলে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত টিকা বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব হবে। অনেক আগেই দেশে টিকা উৎপাদনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল বিশেষজ্ঞদের পক্ষ থেকে। সেদিকে নজর না দিয়ে কেন বিদেশনির্ভরতাকে প্রাধান্য দেওয়া হলো তা অবশ্যই একটি প্রশ্নবিদ্ধ বিষয়। তার পরও আমরা আশা করব দেশে টিকা উৎপাদনের উদ্যোগটি দ্রুত করা হবে। দেশে উৎপাদিত চীনা টিকার দাম নির্ধারণে যেন জাতীয় স্বার্থ প্রাধান্য পায় এমনটিও প্রত্যাশিত।