মুনাফাখোরদের কারসাজি চিনির বাজার অস্থির করে তুলেছে। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে এ নিত্যপণ্যটির দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি প্রায় ৫ টাকা। দেশের চিনির চাহিদার সিংহভাগ পূরণ হয় বিদেশ থেকে আমদানি করে। অপরিশোধিত চিনি দেশে এনে পরিশোধন করে বাজারজাত করা হয়। দেশে চিনির কোনো ঘাটতি নেই। চিনি পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে পর্যাপ্ত মজুদও রয়েছে। দেশি চিনিকলগুলোর মজুদও সন্তোষজনক। টিসিবির কাছেও রয়েছে সন্তোষজনক মজুদ। টিসিবির হিসাবে এক সপ্তাহ আগে বাজারে প্রতি কেজি চিনির দাম ছিল ৬৮ থেকে ৭৫ টাকা। বর্তমানে সে চিনির দর ৮০ টাকা। বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের উৎপাদিত চিনির দাম বাড়েনি। প্রতি কেজি চিনির উৎপাদন খরচ ১৩৩ টাকা হলেও সরকার নির্ধারিত দামে তাদের খোলা চিনি ৬৩ আর প্যাকেট চিনি ৬৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে বাস্তবে খোলা ও প্যাকেটজাত দুই ধরনের চিনিই কেজিপ্রতি নির্দিষ্ট দামের চেয়ে ১৫-১৬ টাকা বেশিতে বিক্রি হচ্ছে। পর্যাপ্ত মজুদ থাকা সত্ত্বেও চিনির দাম বৃদ্ধির যৌক্তিক কোনো কারণ নেই। যেমন মোটা চালের মূল্যবৃদ্ধির পেছনেও নেই কোনো যৌক্তিক কারণ। বিপুল পরিমাণ চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়ায় পাইকারি বাজারে মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতা ঠেকানো সম্ভব হয়েছে। চিনির পর্যাপ্ত মজুদ থাকা সত্ত্বেও কেন দামে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা তা খতিয়ে দেখা দরকার। নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতা রোধে সরকারকে অবশ্যই কঠোর হতে হবে। করোনাকালে এমনিতেই সরকারি কর্মচারী ছাড়া সিংহভাগ মানুষের আয় কমেছে। কর্মহীন মানুষের সংখ্যাও এখন বিপুল। এ অবস্থায় নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি অস্থিতিশীলতার হুমকি সৃষ্টি করবে; যা কোনোভাবেই কাম্য হওয়া উচিত নয়। মুনাফাখোরদের নিবৃত্ত করতে সরকার চোখ-কান খোলা রাখবে আমরা এমনটিই দেখতে চাই। প্রয়োজনে চিনিসহ সব নিত্যপণ্যের আমদানি বাড়িয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করতে হবে।