বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে উত্তরোত্তর সম্পর্ক ভালো হওয়ার পরও দুই দেশের সীমান্ত রক্তপাতমুক্ত করার প্রচেষ্টা যখন সফল হচ্ছিল না তখন আমরা সতর্কতার সঙ্গে একটি নতুন অগ্রগতি লক্ষ্য করি। এখন থেকে সীমান্ত হত্যাকান্ড ঘটলে তার যৌথ তদন্ত হবে। ২০১৬ সালে এমন একটি নীতি গ্রহণের পরও গত কয়েক বছরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিক হত্যা বেড়েছে। তাই আমরা উদ্বিগ্ন। লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার বুড়িরহাট সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে তিনজন নিহত হয়েছেন। এর দুজন বাংলাদেশি ও একজন ভারতীয়। এ ঘটনায় আরও তিনজন আহত হয়ে গোপনে চিকিৎসা নিচ্ছেন। নিহত বাংলাদেশির লাশ বিএসএফ সদস্যরা নিয়ে গেছেন। বিজিবি ও এলাকাবাসী জানান, কালীগঞ্জ উপজেলার গোড়ল ইউনিয়নের বুড়িরহাট সীমান্ত হয়ে ১০-১৫ জন গরু ব্যবসায়ী ভারতের অভ্যন্তরে গরু আনতে যান। ভোররাতে সবাই মিলে গরু নিয়ে সীমান্ত অতিক্রমকালে টহলরত ভারতীয় কোচবিহার জেলার ৭৫ বিএসএফ ব্যাটালিয়ন সাতভান্ডারিয়া ক্যাম্পের সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। গ্রামের মানুষ শুক্রবার সকালে ভুট্টা খেতে লাশ দেখতে পেলে বিষয়টি জানাজানি হয়। এ হামলা সন্দেহাতীতভাবে উদ্বেগজনক এবং এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকেও প্রয়োজনীয় উদ্যোগ ও ভূমিকা পালন করতে হবে। কিন্তু আমরা বেদনার সঙ্গে লক্ষ্য করি, ফেলানীর মতো নিরস্ত্র ‘অবৈধ চলাচলকারী’র ওপর গুলিবর্ষণে বিএসএফ অব্যাহতভাবে অসতর্ক। আমরা আশা করব এ ধারা অবশ্যই বন্ধ হবে। সীমান্তে চোরাচালান বা পাচারসহ বিভিন্ন অপরাধ রোধ করা সীমান্তরক্ষীদের দায়িত্ব। এর অর্থ এই নয় যে কাউকে চোরাকারবারি বলে সন্দেহ হলেই গুলি করে হত্যা করতে হবে। প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার না করেও চোরাচালান দমন করা যায় এবং সেটাই সভ্য দুনিয়ার রীতি। দুই দেশের মৈত্রীর প্রতিফলন সীমান্তে না ঘটার বিষয়টি চরম দুর্ভাগ্যজনক।