রবিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা
পাঠকের পত্র

ওদের চিহ্নিত করুন

সমাজসেবা অধিদফতরে বিদ্যমান অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী ইউনিয়ন সমাজকর্মীর পদের সংখ্যা ৩ হাজার ৮৮। এ মাঠকর্মীদের মাধ্যমেই বঙ্গবন্ধুর প্রবর্তিত সুদমুক্ত ঋণদান কর্মসূচি, বয়স্কভাতা, বিধবাভাতা-সহ বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন হয়। ২০১৮ সালের ৯ জুলাই ৪৬৩টি ইউনিয়ন সমাজকর্মী পদে জনবল নিয়োগের জন্য জাতীয় দৈনিকে ও সমাজসেবা অধিদফতরের ওয়েবসাইটে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। এতে আবেদন জমা পড়ে ৬ লাখ ৬২ হাজার ২৭০টি। বর্তমানে শূন্যপদের সংখ্যা ১ হাজার ২৬০। ২০১৯ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর আট বিভাগে জেলাপর্যায়ে পরীক্ষা কেন্দ্র বাছাই করে লিখিত পরীক্ষার ইন্টারভিউ কার্ড ইস্যু করা হয়। ২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর একটি দৈনিকে নিয়োগ নিয়ে ঘুষ বাণিজ্যের খবর প্রকাশিত হওয়ায় কর্তৃপক্ষ নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত করেন। ২০২১ সালের ২৪ ডিসেম্বর গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকার ৩৭৩ পরীক্ষা কেন্দ্র নির্বাচন করে আবেদন প্রার্থীদের অনুকূলে ইন্টারভিউ কার্ড ইস্যু করা হয়। ২৩ ডিসেম্বর মাঠপর্যায় থেকে ৬০০ কর্মকর্তাকে সমাজসেবা অধিদফতরে এনে দিনব্যাপী পরীক্ষা গ্রহণের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। একই দিন ৬টায় মন্ত্রণালয়ের সচিবের নির্দেশে সমাজসেবা অধিদফতর কর্তৃপক্ষ অনিবার্য কারণবশত পরীক্ষা স্থগিত করেন। একই দিন রাত ৮টায় ডিবির লোকজন সমাজসেবা অধিদফতর ঘেরাও করে একজন অতিরিক্ত পরিচালক, একজন সহকারী পরিচালক ও চারজন কর্মচারীকে গ্রেফতার করে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যান। দুই দিন তাদের আটক রাখা হয়। তাদের মধ্যে শক্তিশালী মহলের হস্তক্ষেপে চারজন ছাড়া পান। দুজন বর্তমানে কেরানীগঞ্জ কারাগারে আটক আছেন। ডিবি কার্যালয়ে যাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে তারা ক্ষমতাসীন দলের নাম ভাঙিয়ে বিগত পাঁচ বছর সমাজসেবা অধিদফতরে নিয়োগ-বদলি বাণিজ্য করে কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক। দুঃখজনক হলেও সত্য, এ দুর্নীতিবাজ চক্রের নেতৃত্ব দিচ্ছেন রাজনৈতিকভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত একজন সহকারী একান্ত সচিব। সচিব, মহাপরিচালক এবং পরিচালক প্রশাসন ও অর্থ নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করার জন্য বদ্ধপরিকর। কিন্তু রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ থাকলে তা সম্ভব নয়। ৩ হাাজর ৮৮ পদের মধ্যে ১ হাজার ২৬০ পদ খালি। সমাজকল্যাণ কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। সরকারের উচিত একটি আন্তমন্ত্রণালয় তদন্ত কমিটি গঠন করে যাদের কারণে বারবার নিয়োগ পরীক্ষা পিছিয়ে যাচ্ছে তাদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া। পাশাপাশি দ্রুত সময়ের মধ্যে সব প্রতিকূলতা দূর করে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করা সমাজসেবা অধিদফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও দাবি। গুটিকয় স্বার্থবাদীর জন্য সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হওয়া উচিত নয়।

                -মো. মাজহারুল ইসলাম, সাবেক মহাসচিব বাংলাদেশ সমাজসেবা অফিসার্স       অ্যাসোসিয়েশন সমাজসেবা অধিদফতর।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর