করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে। সরকারি হিসাবে প্রতিদিন এখন ১০ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে। কিন্তু বাস্তবে এ সংখ্যা ৫০ গুণ বেশি হলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। কারণ যারা নমুনা পরীক্ষার জন্য কভিড শনাক্ত কেন্দ্রে যান এবং সংক্রমণের বিষয়টি ধরা পড়ে কেবল তাদেরই সরকারিভাবে আক্রান্ত বলে ধরা হয়। বাংলাদেশসহ সারা দুনিয়ায় এ পদ্ধতি অনুসৃত হওয়ায় করোনাভাইরাস আক্রান্তদের সরকার-স্বীকৃত তালিকা এবং বাস্তবের পার্থক্য কখনো কখনো আকাশ-পাতালও হয়ে থাকে। জানুয়ারিজুড়ে সারা দেশে সর্দি কাশি জ্বরে ভুগছেন এমন সংখ্যা বিপুল। শ্বাসকষ্ট না থাকায় আক্রান্তের একটি ক্ষুদ্র অংশ নমুনা পরীক্ষা কেন্দ্রে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে করোনা সংক্রমণের লাগাম টানতে পাঁচ দফা জরুরি নির্দেশনা জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। পরিস্থিতি মোকাবিলায় দুই সপ্তাহ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে স্কুল-কলেজ। অনলাইনে ক্লাস চলবে বিশ্ববিদ্যালয়ে। শুক্রবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে পাঁচটি জরুরি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। এর মধ্যে আছে- ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সব স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজ নিজ ক্ষেত্রে অনুরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। রাষ্ট্রীয়, সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় অনুষ্ঠান ১০০ জনের বেশি নিয়ে করা যাবে না। এসব ক্ষেত্রে যারা যোগ দেবেন তাদের অবশ্যই ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট বা পিসিআর সার্টিফিকেট থাকতে হবে। সরকারি-বেসরকারি অফিস, শিল্পকারখানার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবশ্যই ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট গ্রহণ করতে হবে। বাজার, মসজিদ, বাসস্ট্যান্ড, লঞ্চঘাট, রেলস্টেশনসহ সব ধরনের জনসমাবেশে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বাংলাদেশের সাফল্য মোটামুটি ভালো। মহামারিতে মৃত্যুহার সীমিত থাকলেও অর্থনীতির জন্য তা সর্বনাশ ডেকে এনেছে। যে কারণে করোনাকালেও অর্থনীতি সচল রাখার কোনো বিকল্প নেই। তা নিশ্চিত করতে মাস্ক ব্যবহারে বাধ্যবাধকতা আরোপের দিকে নজর দিতে হবে। মেলাসহ সব ধরনের সমাবেশ নিষিদ্ধের কথা ভাবতে হবে।