মিয়ানমারের সেনা অভিযানে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল মানবিক কারণে। তবে সে মানবিকতার খেসারত বাংলাদেশকে দিতে হচ্ছে সুদে আসলে। মিয়ানমারের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীগুলোকে বিদ্রোহের পথে উসকে দেওয়ার পেছনে সে দেশের সামরিক জান্তার সংকীর্ণ মনোভাব নিঃসন্দেহে দায়ী। একইভাবে দায়ী পশ্চিমা দেশগুলোর ভূরাজনৈতিক অভিলাষ। মিয়ানমার চীনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হওয়ায় সে দেশে নিজেদের আধিপত্য বিস্তারে তারা উঠেপড়ে লেগেছে। বাংলাদেশকে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে তারা চাপ সৃষ্টি করেছিল প্রত্যক্ষভাবে এবং পাশাপাশি জাতিসংঘের মাধ্যমে। কিন্তু বাংলাদেশে আশ্রয় পেয়ে আশ্রয়দানকারীদের বিরুদ্ধে এক অঘোষিত যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে রোহিঙ্গারা। মাদক ও অস্ত্র ব্যবসায় ব্যাপকভাবে জড়িত তারা। দেশের আইনশৃঙ্খলার জন্য তারা কার্যত চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করছে। বিশেষজ্ঞদের মতে রোহিঙ্গাদের অপরাধপ্রবণতার রাশ টানতে না পারলে দেশের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। রোহিঙ্গা পুরুষের পাশাপাশি নারী-শিশুদের ব্যবহার করা হচ্ছে মাদক পাচারের ক্যারিয়ার হিসেবে। তাদের গ্রেফতার করলেও হোতাদের নাম বলতে পারছে না তারা, ফলে মূল অপরাধীরা থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। মূলত কম টাকায় রোহিঙ্গারা ক্যারিয়ার হতে রাজি হয় এবং তারা গ্রেফতার হলেও মাদকের হোতাদের বিষয়ে তেমন কোনো তথ্য দিতে পারে না। তাই মাদক ক্যারিয়ার হিসেবে রোহিঙ্গা নারী ও শিশুদের ব্যবহার করা হচ্ছে ব্যাপকভাবে। কক্সবাজারের ৩৪ রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে অপরাধী চক্রের পদচারণা রয়েছে। ব্লকে ব্লকে গড়ে উঠেছে এক বা একাধিক সন্ত্রাসী গ্রুপ। ছোট-বড় শতাধিক গ্রুপের একেকটিতে সদস্য রয়েছে ৫০ থেকে ১০০ জন। এ গ্রুপগুলো ব্লকভিত্তিক অপরাধ কর্মকান্ড নিয়ন্ত্রণ করে। ভুয়া পরিচয়ে পাসপোর্ট নিয়ে বিদেশে গিয়ে অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে রোহিঙ্গারা। ক্ষুণœ হচ্ছে দেশের সুনাম। এদের নিয়ন্ত্রণে এখনই কড়া পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি হয়ে উঠেছে। রোহিঙ্গাদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে জাতিসংঘসহ পশ্চিমা দেশগুলোর ওপর চাপ প্রয়োগ করতে হবে।