রবিবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

নিষেধাজ্ঞার দ্রুত নিষ্পত্তি কাম্য

মেজর জিল্লুর রহমান (অব.)

নিষেধাজ্ঞার দ্রুত নিষ্পত্তি কাম্য

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার খড়্গ নেমেছে এলিট ফোর্স র‌্যাবের বর্তমান ও সাবেক কজন শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। একজন দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে এ নিষেধাজ্ঞার ক্ষোভে কয়েক রাত ঘুমাতে পারিনি। এপাশ-ওপাশ করেছি আর ভেবেছি শকুনকে আমার দেশটি চেনাল কে। অনেক কষ্ট-ক্লেশ প্রতিকূলের মহাসাগর পেরিয়ে বাংলার দুঃখী মানুষ যখন সমৃদ্ধির তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে সুখভোগ করবে তখনই আমাদের ভাগ্যাকাশে অশনিসংকেত! দীর্ঘদিনের সুপরিকল্পনা ও পরিশ্রমের ফসল হিসেবে বাংলাদেশ আজ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আমাদের রাজনীতিকদের চাপার জোর দেখলে হয়তো নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত উল্টে দিতেন। ভাবতেন এমন সরব কণ্ঠ খালি হাতে ফিরিয়ে দেওয়া যায় না। সাহসের সঙ্গে তথ্য-উপাত্ত ছাড়াও আমরা চাপাবাজির যুদ্ধ চালাতে পারি। তবে বিপদ যে এড়ানো যায় না মার্কিন নিষেধাজ্ঞা তারই প্রমাণ।

যুক্তরাষ্ট্রের পর বাংলাদেশের র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্র দফতরে চিঠি দিয়েছেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের এক সদস্য। ইইউর পররাষ্ট্রনীতি-বিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেলের কাছে দেওয়া ওই চিঠির বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারেরও নজরে এসেছে। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, বাংলাদেশ সরকারের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের মাধ্যমে প্রভাবিত হয়ে একজন এমপি একটি চিঠি লিখেছেন। এমন ঘটনা অতীতেও ঘটেছে, ভবিষ্যতেও হয়তো ঘটবে। বাস্তবতা হলো, এর বিন্দুমাত্র কোনো প্রভাব পড়বে না। কারণ বাংলাদেশের সঙ্গে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের দীর্ঘ ও গভীর সম্পর্ক এবং সম্পৃক্ততা আছে। কারও লবিংয়ের কারণে তাতে প্রভাব ফেলতে পারবে না। ইইউ পার্লামেন্ট সদস্য স্টেফানেক তাঁর চিঠিতে ইইউর পররাষ্ট্রনীতি-বিষয়ক প্রধানকে লিখেছেন, বাংলাদেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির জন্য দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দলের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য নির্বাচনের ফল পরিবর্তন এবং রাজনৈতিক ভিন্নমত দমন। র‌্যাবের সাবেক-বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আমেরিকা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে এ প্রতিষ্ঠানকে নিষ্ক্রিয় করার জন্য। র‌্যাবের অনেক ভালো কাজ আছে, ভুলও আছে। সমালোচকরা বলেন, র‌্যাব আগে অপরাধীদের হত্যা করে বাহবা পেয়েছে। পরে তাদের হাতে যে নিরপরাধ লোকজন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা তারা নিজেরাও অস্বীকার করতে পারবে না। এজন্য শাস্তিরও সম্মুখীন হয়েছেন কেউ কেউ। আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা গোপনীয় বিষয়। অনির্দিষ্টকালের জন্য থাকে কি না তা পরিষ্কার নয়। কতজনকে, কটা প্রতিষ্ঠানকে তাদের জালে আবদ্ধ করা হবে তা যত সময় গড়াবে ততই সামনে আসবে। তাই এ বিষয়ে সতর্ক হতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করে খুব বেশি লাভ হবে না। র‌্যাব নিঃসন্দেহে একটি ভালো আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। র‌্যাবের কারণে দেশের মানুষের মানবাধিকার রক্ষিত হয়েছে। সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের দমন করে তারা ভালো কাজই করেছে। তবে তাদের কিছু ভুল নিজেদের সুনাম ক্ষুণ্ণ করেছে। যে কারণে আমেরিকার বিরোধিতা নয়, তাদের বলতে হবে র‌্যাবের প্রশিক্ষণে সহায়তা দাও। র‌্যাব সদস্যরা যাতে মানবাধিকারের প্রতি সচেতন হয় সেজন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।

আমেরিকার বিবেচনায় বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের দেহের অভ্যন্তরে মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও সুশাসনের ঘাটতি আছে। এ বিষয়ে দৃশ্যমান উন্নতি করে সরকারকে দেখাতে হবে। ঘাটতি অপূরণ থাকলে পরিস্থিতি জটিল রূপ ধরে দিনে দিনে বড় হয়ে নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে পারে। ইস্যুটি নিয়ে এত দিন রাজনীতিকরা, মন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী কথা বলছেন গোঁয়ার্তুমির ভাষায় যা উচিত হয়নি। আজকের দুনিয়ায় কোনো দেশ বিচ্ছিন্ন দ্বীপ নয়। বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে তার পরও স্বীকার করতে হবে, পশ্চিমা দুনিয়ার চেয়ে আমরা অনেক অনেক পিছিয়ে। এখানে রেষারেষি কোনো কল্যাণ ডেকে আনবে না।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন বলেছেন, আমেরিকার মানবাধিকার অবস্থা খুবই খারাপ। সেখানে মানবাধিকার নেই। আমেরিকায় ভুলত্রুটি নেই তা কেউ বলবে না। কিন্তু আমাদের অবস্থা যে আরও খারাপ তা সবারই জানা। তাই কথা বলার সময় সতর্ক হতে হবে। আরেক উজির বলেছেন, ইরাক, আফগানিস্তান আক্রমণ, পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে ঢুকে লাদেনকে হত্যা- এ কোন গণতন্ত্র? সৌদির সঙ্গে দোস্তি সেখানে গণতন্ত্র নিয়ে উচ্চবাচ্য করে না। পানামায় নরিয়েগাকে গ্রেফতারের পর খতম- এমন সব তেলেসমাতি তো গণতন্ত্রে নেই। তাদের সা-রে-গা-মা-পা-ধা-নি-সা ঠিক নেই। জোকার ট্রাম্প সাহেব গায়ের জোর দেখিয়ে ক্ষান্ত হয়েছেন। তারা আমাদের সবক দেয় কোন মুখে।

বাস্তবতা হলো, ক্ষমতা কর্তৃত্ব যাদের আছে তারা সর্বত্রই অপরাধ করে দেদার পার পাচ্ছে। তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার ক্ষমতা আমাদের আছে কি? মন্ত্রীদের কথায় মনে হয় আমাদের ভান্ডারে অনেক ক্ষমতা আছে তাই মার্কিন মুলুক আমাদের সমীহ করে। পদ্মা সেতু নির্মাণ আমরা দেখিয়ে দিয়েছি। কিন্তু এসব আস্ফালনে আমাদের লাভ আছে কি না ভাবতে হবে। আমেরিকা, ভারত, চীন ভৌগোলিক রাজনীতির খিস্তি-খেউর তুলে মানবাধিকার-গণতন্ত্র ইস্যু চাপা দেওয়া যাবে বলে মনে হচ্ছে না। আমরা এখন ত্রিশঙ্কু প্যাঁচে পড়েছি। বাস্তবতা বুঝতে হবে। সংঘাত নয়, কীভাবে আমেরিকার আস্থা অর্জন করা যায় সেদিকে যেতে হবে। আমেরিকা মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের ঘাটতির যে অভিযোগ তুলেছে তা উড়িয়ে না দিয়ে কূটনীতির ভাষায় পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে হবে। সরকারপক্ষের সুর- হঠাৎ নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হলো কেন এখন? র‌্যাব অনেক আগে সৃষ্টি হয়েছিল এত দিন চুপ থাকল কেন? ভালো প্রশ্ন। তবে এসব জ্ঞানগর্ভ জিজ্ঞাসা কি নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে সাহায্য করবে?

বাংলাদেশকে বেশ আগে মানবাধিকারের ক্রমাবনতি ও গণতন্ত্রের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অনুসন্ধান পর্যবেক্ষণ তারা লিখিতভাবে জানিয়েছে। মানবাধিকার সংস্থা ও যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটররাও দীর্ঘদিন ধরে র‌্যাবকে নিষিদ্ধের দাবি উত্থাপন করে আসছিলেন। বিশেষ করে ২০১৮ সালে টেকনাফ পৌরসভার কাউন্সিলর আকরামুল হককে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ হত্যার মধ্য দিয়ে বিষয়টির গুরুত্ব সামনে আসে। গত বছরের শেষ ভাগে ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র‌্যাব-পুলিশের সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে পৃথকভাবে এ নিষেধাজ্ঞা দেয় দেশটির ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট (রাজস্ব বিভাগ) ও পররাষ্ট্র দফতর। নিষেধাজ্ঞার কারণ হিসেবে বেসরকারি সংস্থার বরাত দিয়ে মার্কিন রাজস্ব দফতর বলে, র‌্যাবের বিরুদ্ধে ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৬০০টির বেশি গুম, ২০১৮ সাল থেকে ৬০০ জনকে বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। এ মানবাধিকার লঙ্ঘন ও আইনের শাসনের প্রতি অবজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থ ও বাংলাদেশের মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতি হুমকির মুখে ফেলছে। অন্যদিকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের র‌্যাব নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে চিঠি দিয়েছে আন্তর্জাতিক ১২টি মানবাধিকার সংস্থা। ২০ জানুয়ারি এ চিঠির তথ্য হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। তবে চিঠিটি জাতিসংঘের আন্ডার-সেক্রেটারি জেনারেলকে পাঠানো হয়েছে গত বছরের ৮ নভেম্বর। তবে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে এ চিঠির আনুষ্ঠানিক কোনো উত্তর দেওয়া হয়নি।

আমাদের দেশে মানবাধিকারের দাবি জানালে একদল বলে, দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। যারা এমনটা বলছেন রাষ্ট্র, দেশ, সরকারের সংজ্ঞায় অস্পষ্টতা আছে তাদের জ্ঞানে।

একজন বুদ্ধিজীবী জানতে চাইলেন- গোবেচারা মুস্তাক কার্টুন এঁকে গ্রেফতার হলেন, জেলের ঘানি টানলেন, তারপর পরকাল। এ অমানবিকতায় একজন নাগরিকের মতপ্রকাশের অধিকার লঙ্ঘন হওয়ার প্রতিবাদ করলে কি দেশের বিরুদ্ধে কথা বলা হয়? নাকি মানবাধিকারের ব্যত্যয় সরকারকে দেখিয়ে দিলে তা সরকারের উপকার করা হয়? ভোটের অধিকার নেই দেশে নির্ভয়ে মতপ্রকাশ করার পরিবেশ নেই এমন কথা মুখে আনলে রাজাকার-জামায়াতি তিলক লাগায় কপালে। অন্ধ হলে প্রলয় বন্ধ হয় না। সবার সুমতি এখন জাতির টিকে থাকার লড়াইয়ে প্রয়োজন।

বাস্তবতা হলো, কারও খুশি বা বেজারে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবে না। বাংলাদেশে ক্ষমতাসীনরা যা বলেন তা-ই হয়। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট তেমন ক্ষমতার অধিকারী না হলেও তারা যা বলবেন তা-ই করবেন। সেখানে অনেক সেইফটি নেট আছে একক ইচ্ছা, সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া কঠিন। টক শোয় একবার এক আলোচক খেদের সঙ্গে বললেন, ৪০ জন বিশিষ্ট নাগরিক রাষ্ট্রপতির কাছে নির্বাচন কমিশনের অনিয়ম নিয়ে লিখলেন কোনো টুঁশব্দ আজ পর্যন্ত নেই। সরকার কাউকে বিবেচক মানুষ মনে করে না। তার সুযোগ নিয়েছে বিরোধী পক্ষ। মানবাধিকার ইস্যু নিয়ে কিছু লোক ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে আমেরিকাকে খেপিয়ে তুলছে। এরা দেশের অমঙ্গল করছে এমন কথা সরকারের পক্ষ থেকে আসছে, আসাটা স্বাভাবিক। কেউ কেউ বলছেন যুক্তরাষ্ট্র মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল। তাতে কি আমরা বিজয় অর্জন করিনি। ’৭৪ সালে কেনা খাদ্য না দিয়ে দুর্ভিক্ষ ঘটিয়েছে তাতে আমরা কি ঘুরে দাঁড়াইনি? সব সত্যি সহি কিন্তু বিশ্ব পরিস্থিতি কি আগের মতো আছে এখন? চীন, সৌদি আরব অনেক দেশও সেদিন সমর্থন করেনি। আমরা লড়াই করেছি শুধু আমাদের স্বাধীনতার জন্য কেউ করুণা করেনি।

ভারত যুদ্ধ করেছে তার রাজনীতির প্রয়োজনে। ভিনদেশের জন্য কেউ যুদ্ধ করে না যদি সেই রাষ্ট্রের স্বার্থ না থাকে। মুখে কুলুপ এঁটে কূটনৈতিক পরিকল্পনার মাধ্যমে সমাধান খোঁজার চেষ্টা চালাতে হবে। মাথা-মোটা লোকের কথায় জটিলতা বাড়বে। গার্মেন্ট ব্যবসায়ীরা উদ্বেগে আছেন, ৭ জানুয়ারি সভা করে তারা তা প্রকাশ করেছেন। নীতিনির্ধারকদের বিশ্লেষণ করতে হবে আমেরিকা তার চোখের চশমার ফ্রেম থেকে আগের লেন্স পরিবর্তন করে নতুন লেন্স কেন সেট করেছে।

আমাদের বড় দাতা জাপান, ইইউ। আমেরিকার ইচ্ছা দেখেই তারা কাজ করে। আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণ করে আমেরিকা। সংবেদনশীল বিষয়গুলো অতি আবেগী হয়ে ভুলে গেলে সর্বনাশ। আমেরিকার পক্ষে সাফাই গাওয়ার কিছু নেই। বলা হয়, একসময় তারা গুয়ান্তানামো বে কারাগারে বন্দিদের উলঙ্গ করে শিকারি জার্মান শেফার্ড কুকুর লেলিয়ে দিয়েছে। বিনা বিচারে দিনের পর দিন অমানবিক নির্দয় নির্যাতন চালিয়েছে। নির্বাচন সামনে রেখে তুচ্ছ ঘটনায় কালোদের গ্রেফতার করে অলিখিত প্রথায় কিছুদিন জেলে রাখে যাতে তারা ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। অতীতের মানবাধিকার লঙ্ঘনের এ লম্বা ফিরিস্তি দেখিয়ে লাভ হবে না। আমরা তো হাঙরের মুখে পড়েছি। তারা জানতে চাইবে বারবার মানবাধিকার গণতন্ত্র সুশাসন নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান কী।

সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধী দল কলকাঠি নেড়ে এমন কুকর্ম করেছে শোনা যাচ্ছে মন্ত্রীদের মুখে। এ অবাস্তব কথায় কোনো লাভ হবে না। মুখের কথায় চিঁড়া ভিজবে না। সরলীকরণে না গিয়ে অভিযোগের আলামত বাস্তবে আছে কি না, মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে কি না খতিয়ে দেখে এগোতে হবে। অভিজ্ঞ মহল মনে করে, যারা বাংলাদেশের উন্নয়ন চায় না সরকার উৎখাতের পরিকল্পনা করে তারাই নালিশ করে বিপদ ডেকে এনেছে- এসব দোষারোপের জিগির দিয়ে জটিল পরিস্থিতি মোকাবিলা করা যাবে না। এক প্রবাসী দেশপ্রেমিক ভাই ক্ষোভে ফেটে পড়লেন আক্রমণাত্মক শব্দমালা নিয়ে। তিনি বলেন, বিদেশে আশ্রিত কিছু অর্থলোভী ডক্টরেট ১৮ কোটি মানুষকে বিপদে ফেলতে মালকোচা দিয়ে গণমাধ্যমে উঠেপড়ে লেগেছে। এ আহম্মকরা মিছিল দিয়ে ডক্টরেট ম্যানেজ করেছে, ছাগল খাসি করার ওপর ডক্টরেট নিয়েছে। এক বিষয়ের ওপর ডক্টরেট করে সর্ব বিষয় ডক্টরেটের বাদ্য বাজাচ্ছে। এক উজির বাহাদুর বলছেন, আমাদের সুসম্পর্ক আছে। ভালো সম্পর্ক থাকলে নিষেধাজ্ঞা হয় কী করে, সম্পর্ক হয় শর্তের ওপর; শর্ত মানতে হয়। যারা দেশের টাকা লুণ্ঠন করে বালাখানা বানিয়ে শেষ বয়সে নিরাপদে মজা করতে বিদেশে টাকা চালান দিয়েছে, তাদের তালিকা করে সে দেশে বসবাসরত আশ্রিত প্রবাসীরা সরকারের ওপর চাপ দিচ্ছে যাতে তাদের টাকা বাজেয়াপ্ত করে সে দেশের উন্নয়নে কাজে লাগায়। পাচারের টাকা নির্বিঘ্নে ভোগ করার সুযোগ সংকুচিত হচ্ছে।

                লেখক : নিরাপত্তা বিশ্লেষক

        [email protected]

সর্বশেষ খবর