মঙ্গলবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

ভূমিসংক্রান্ত আইন

মাৎসন্যায়ের অবসান কাম্য

বাংলাদেশের মানুষের কাছে জমি বিবেচিত হয় মৌলিক সম্পত্তি হিসেবে। জমিসংক্রান্ত মালিকানার স্পর্শকাতরতা সহজে অনুমেয়। অথচ কায়েমি স্বার্থে যুগ যুগ ধরে এ দেশে জমিসংক্রান্ত যে আইন বিরাজ করছে তাকে জোর যার মুলুক তার অপনীতির রক্ষাকবচ বললেও কম বলা হবে। জমিসংক্রান্ত বিরোধের সঙ্গে সমাজপতি, সন্ত্রাসী ও আইন-আদালতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পরজীবী টাউট শ্রেণির স্বার্থ জড়িত এবং তাদের ইন্ধনে জালিয়াতি ও প্রতারণা নির্ভর জমিজমাসংক্রান্ত আইন টিকে আছে অক্ষয় সত্তায়। ভূমি ব্যবস্থাপনায় যে মাৎস্যন্যায় নীতি চলে আসছে তার অবসানের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ভূমি নিয়ে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ, মামলা-মোকদ্দমার মূল কারণ হিসেবে এ খাতের ২২টি অপরাধ চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তি ও জরিমানার বিধান রেখে ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ

ও প্রতিকার আইন-২০২১’-এর প্রাথমিক খসড়া চূড়ান্ত করেছে ভূমি মন্ত্রণালয়। বিভিন্ন মহলের মতামতের পর যথাযথ প্রক্রিয়া শেষে বিল আকারে তা সংসদে উপস্থাপন করা হবে। প্রস্তাবিত আইনটি কার্যকর হলে ভূমিসংক্রান্ত মামলা কমে যাবে এবং জনগণের ভোগান্তি ও হয়রানি দূর হবে বলে আশা করা হচ্ছে। গত ২০ জানুয়ারি ডিসি সম্মেলনের পর ভূমিমন্ত্রী বলেছেন, অবৈধ ভূমি দখলকে ফৌজদারি অপরাধের আওতায় এনে ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইনের খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। জালিয়াতি বা প্রতারণার মাধ্যমে এবং অন্যের সঙ্গে যোগসাজশে দলিল করে বা কোনো দলিল ছাড়াই অবৈধভাবে ভূমির দখল গ্রহণ বা দখল গ্রহণের চেষ্টা বা এর ক্ষতি রোধে আইনটি ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশে যত হানাহানি ও মামলা হয় তার সিংহভাগের সঙ্গে জমিসংক্রান্ত বিরোধ জড়িত। এ-সংক্রান্ত মামলা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তর পর্যন্ত চলার নজিরও কম নয়। আমরা আশা করব, শুধু অপদখল বন্ধ নয়, ভূমি ব্যবস্থাপনা আধুনিকীকরণের মাধ্যমে এ খাতে ঘুষ -দুর্নীতির যে রাজত্ব চলছে তা বন্ধেরও উদ্যোগ নেওয়া হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর