শুক্রবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

জাল মুদ্রার দৌরাত্ম্য

কঠোর শাস্তির আইনই কাম্য

জাল মুদ্রা দেশের অর্থনীতির জন্য বড় হুমকি। বাংলাদেশের সংঘবদ্ধ অপরাধীরা শুধু বাংলাদেশি নোট নয়, ভারতীয় জাল নোট তৈরিতে জড়িত এমন অভিযোগও ওপেন সিক্রেট। বাংলাদেশকে ভারতীয় এবং পাকিস্তানি জাল নোট পাচারের ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহারের প্রমাণও পেয়েছেন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা। এর ফলে দেশের সুনাম যে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে তা সহজেই অনুমেয়। আশঙ্কা করা হয়, জঙ্গিবাদের অর্থ জোগানের ক্ষেত্রে জাল নোট তৈরির সম্পর্ক রয়েছে। জাল নোটের দৌরাত্ম্য থামাতে এমন একটি আইন করতে যাচ্ছে সরকার যাতে সর্বনিম্ন শাস্তি পাঁচ বছর কারাদণ্ড ও ৫ লাখ টাকা জরিমানা থেকে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১ কোটি টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। সন্দেহভাজনকে বিনা পরোয়ানায় তল্লাশি ও বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করা যাবে। উপরন্তু এ আইনে বর্ণিত অপরাধ জামিন-অযোগ্য বলে গণ্য হবে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত আইনটির খসড়া এমনভাবে করা হয়েছে যা জাল মুদ্রা তৈরি, ব্যবহার বা পাচারের সঙ্গে জড়িতদের কঠোর বার্তা দেবে। এ-সংক্রান্ত মোট ১১ ধরনের অপরাধ আমলে নিয়ে এর প্রথম সাতটি ধারার জন্যই সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার বিধান রাখা হয়েছে। অর্থাৎ যদি কোনো ব্যক্তি আলোচ্য সাতটি ধারার কোনো একটিতে অপরাধী প্রমাণিত হন তবে তিনি যাবজ্জীবন সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন। পাশাপাশি ১ কোটি টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও পাঁচ বছর কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। আমরা এ কলামে বারবার উল্লেখ করেছি জাল নোট তৈরি এবং পাচারকে জামিন-অযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধে সর্বোচ্চ সাজা হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের ব্যবস্থা ছিল দেশের প্রচলিত আইনে। এরশাদের সেনা শাসনামলে রহস্যজনক কারণে মৃত্যুদণ্ডের ধারা বাতিল করা হয়। জাল নোট তৈরি, পাচার ও বাজারজাতে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা থাকলে তা অপরাধীদের সামাল দিতে ভূমিকা রাখবে। তবে প্রয়োগের ক্ষেত্রে আইনের অপব্যবহার যাতে না হয় সেদিকে সর্বোচ্চ সতর্কতাও থাকতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর