বৃহস্পতিবার, ১০ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

এডিপি বাস্তবায়ন

ব্যর্থ কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করুন

দেশের বাজেট প্রণীত হয় জনগণের ট্যাক্সের টাকায়। দেশবাসীর টাকায় প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের বেতন-ভাতা জোগানো হয়। বাড়ি-গাড়িসহ তারা যে সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেন তার উৎসও অভিন্ন। প্রতি বছর যে বাজেট প্রণীত হয় তার সিংহভাগ ব্যয় হয় পরিচালন খাতে। আর বড়জোর দুই তৃতীয়াংশ ব্যয় হয় উন্নয়ন খাতে। যে খাতের সঙ্গে সরাসরি জড়িত দেশের জনগণের স্বার্থ। কিন্তু সব সম্ভবের এই দেশে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে চলে আমলাতান্ত্রিক কারসাজি। প্রকল্প যথাসময়ে বাস্তবায়নের চেয়ে উৎকোচ আদায়ের দিকে থাকে কর্মকর্তাদের নজর। এ কুনজরের কারণে উন্নয়ন খাতে যে অর্থ বাজেটে বরাদ্দ হয় তার একটি উল্লেখযোগ্য অংশই অপচয় হয়। উল্লেখযোগ্য একটি অংশ খরচ করা সম্ভব হয় না দরকষাকষির দোটানায়। ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটের পরিমাণ ছিল ৬ লাখ কোটি টাকার ওপরে। এর মধ্যে উন্নয়ন খাতে অর্থাৎ এডিপির বরাদ্দ ছিল ২ লাখ ২৫ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা। কিন্তু অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে এডিপি ব্যয় হয়েছে মাত্র ৩৪ হাজার ২৪৯ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে এডিপিতে ব্যয় হয়েছিল ৩৬ হাজার ২১৯ কোটি টাকা। এ খাতেও গত অর্থবছরের তুলনায় ২ শতাংশ কম। বিশেষজ্ঞদের মতে বাজেট বাস্তবায়নের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা সরকারি দফতরের অনিয়ম, দুর্নীতি ও সংশ্লিষ্টদের অদক্ষতা। এ ছাড়া রয়েছে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা। এজন্য প্রয়োজন সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন। এ ছাড়া বাজেট বাস্তবায়নে সুশাসন ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজন সরকারের আন্তরিকতা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান। কিন্তু হতাশার বিষয় হলো, বাস্তবে এর কোনো প্রতিফলন নেই বললেই চলে। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দেওয়া হয় তারা জনসেবা নিশ্চিত করবেন সে উদ্দেশ্যে। এডিপি বাস্তবায়নের দায়িত্ব যাদের তারা সে কাজে ব্যর্থ হলে এসব সাদা হাতি পোষার কোনো প্রয়োজন আছে কি না ভাবতে হবে। সময়মতো প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যর্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জবাবদিহির আওতায় আনাও জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর