বুধবার, ২৩ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা জেনোসাইডের স্বীকৃতি

বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নৈতিক দায়

যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নির্যাতনকে ‘জেনোসাইড’ বলে স্বীকার করেছে। সোমবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন সিটির হলোকাস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়ামে পররাষ্ট্র সচিব অ্যান্টনি ব্লিনকেন এ ঘোষণা দেন। মার্কিন স্বীকৃতি মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানবিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় সে দেশের সামরিক জান্তার ওপর চাপ বাড়াতে সাহায্য করবে। স্মর্তব্য, আইনি সংজ্ঞা অনুযায়ী ‘জেনোসাইড’ ‘গণহত্যা’ বা মাসকিলিংয়ের চেয়েও বড় অপরাধ। যার মূল উদ্দেশ্য কোনো জাতি বা গোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করা। মার্কিন পররাষ্ট্র সচিবের মতে ২০১৬ ও ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর হামলায় রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে ধ্বংস করার স্পষ্ট অভিপ্রায় ছিল। মিয়ানমারে সামরিক অভিযানের মুখে ৮ লাখের বেশি রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। এ ছাড়া অনেক রোহিঙ্গা হত্যার শিকার হয়েছে। তিনি তাঁর বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রের তদন্ত প্রতিবেদন থেকে রোহিঙ্গাদের ধর্ষণ, নিপীড়নের শিকার হওয়ার বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরেন। একজন রোহিঙ্গা নারী মিয়ানমার সেনাদের অনুরোধ করেছিলেন তাঁকে যেন অন্তত সন্তানদের সামনে ধর্ষণ করা না হয়। কিন্তু তারা সে অনুরোধ রাখেনি। রাখাইনে যখন রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছিল তখন সেখান থেকে পালানোর পথ ছিল বন্ধ। রোহিঙ্গাদের ধ্বংস করাই ছিল সামরিক বাহিনীর লক্ষ্য। সামরিক বাহিনীসহ উগ্র বর্মি জাতীয়তাবাদীরা রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীকে মিয়ানমারের নাগরিক বলে স্বীকৃতি দিতে চায় না। রোহিঙ্গা নিপীড়নকে জেনোসাইড হিসেবে স্বীকৃতির ফলে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে পাকিস্তানি বাহিনীর তাণ্ডবকে একই অভিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে মার্কিন প্রশাসনের নৈতিক দায়বোধ সৃষ্টি হবে বলে আশা করা যায়। দখলদার পাকিস্তানি সেনারা ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ জেনোসাইড শুরু করে এবং দীর্ঘ নয় মাস ধরে তা চলে। ৩০ লাখ মানুষ হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়; যা অস্বীকার করার সুযোগই নেই।

সর্বশেষ খবর