দেশে অসংক্রামক রোগের মধ্যে স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। বাংলাদেশে এক বছরে স্ট্রোকে মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য বলছে, দেশে স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে ২০১৯ সালে মারা গিয়েছিলেন ৪৫ হাজার ৫০২ জন। ২০২০ সালে এ সংখ্যা বেড়ে ৮৫ হাজার ৩৬০ জনে দাঁড়ায়। ২০২১-এ লাখ ছাড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সচেতনতার ঘাটতি, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ধূমপান ও তামাকজাত পণ্য সেবনের প্রবণতা, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপনসহ নানা কারণে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ছে। এ কারণে মৃত্যুও বাড়ছে। বিশ্বে অসংক্রামক ব্যাধির মধ্যে হৃদরোগের পরেই স্ট্রোকের অবস্থান। এ ছাড়া পঙ্গুত্ব বা শারীরিক অক্ষমতার জন্য স্ট্রোককেই বেশি দায়ী করা হয়। স্ট্রোকে রক্তনালি বন্ধ হয়ে যায় এমনকি রক্তনালি ফেটে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়। স্ট্রোকের লক্ষণগুলো হলো শরীরের ভারসাম্য রাখতে সমস্যা হওয়া, কথা জড়িয়ে যাওয়া, হঠাৎ করে চোখে কম দেখা, মাথা ঘোরানো, অচেতন হয়ে পড়া, শরীরের একদিক অবশ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। চল্লিশোর্ধ্ব ব্যক্তিদের মধ্যে স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি। তবে শিশুদেরও স্ট্রোক হতে পারে। ফাস্টফুডে আসক্তদের মধ্যে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। শিশু ও তরুণদের অনেকে খাদ্যাভ্যাসের কারণে স্ট্রোক ঝুঁকির মুখে পড়তে পারেন। এমনকি মানুষের অস্বাস্থ্যকর খাবার ও অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের জন্য স্ট্রোক প্রবণতা বাড়ছে। দেশে পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ অত্যাধুনিক নিউরোলজিক্যাল চিকিৎসাসেবার প্রতিষ্ঠান হলো ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতাল। সেখানে রোগীর চাপ বেশি। আটটি বিভাগীয় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০০ শয্যার নিউরোসায়েন্স ইউনিট করার পরিকল্পনা নেওয়া হলেও তার কার্যক্রম শুরু হয়নি। পরিবারের কর্মক্ষম ব্যক্তিটি পঙ্গুত্ববরণ করলে পুরো পরিবারের ওপর নেমে আসে দুঃসহ যন্ত্রণা, কষ্ট। স্ট্রোক ঝুঁকি থেকে দূরে থাকতে ধূমপান, জর্দা, গুল, মাদক পরিহার করতে হবে। স্ট্রোক প্রতিরোধের কার্যকরী পন্থা হলো নিয়মিত ব্যায়াম করা।