রবিবার, ২২ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

বন্যা

খাবার ও আশ্রয় নিশ্চিত করুন

দেড় যুগে এমন বন্যা দেখেনি সিলেটের মানুষ। উজানের ঢল আর বৃষ্টিতে সুনামগঞ্জে প্লাবিত হয়েছে নতুন এলাকা। তিন হাসপাতালে ঢুকে পড়েছে পানি। পাহাড়ি ঢলে সিলেটে এ মৌসুমে জলাবদ্ধতা নতুন কিছু নয় বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। কিন্তু যে কথাটি তিনি বলেননি তা হলো, তাঁর শৈশবের সিলেটের সঙ্গে এখনকার সিলেটের তফাত আকাশ-পাতাল। মন্ত্রী নিজেই স্বীকার করেছেন শহরের পুকুর ও দিঘিগুলো ভরাট হয়ে যাওয়ায় জলাবদ্ধতা বেড়েছে। গত পাঁচ দশকেও সিলেটের প্রধান নদী সুরমা খনন করা হয়নি। ফলে তলদেশ ভরাট হয়ে গেছে। উজান থেকে নেমে আসা পানিতে সয়লাব হয়ে যায় নদীর দুই পাড়। সিলেটে কমপক্ষে ১০ থেকে ১২ লাখ মানুষ পানিবন্দি আছেন। রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া প্রান্তে তলিয়ে গেছে ফেরিঘাট। এতে চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া বগুড়ায় যমুনা, বাঙালি ও করতোয়া নদীতে পানি বাড়ছে। নতুন করে সুরমা-কুশিয়ারার উৎসমুখ জকিগঞ্জ, রাজবাড়ী, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। ভাঙন দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন স্থানে পানি কমলেও কমছে না বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ। বন্যাকবলিত এলাকায় খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বন্যার কারণে বিপর্যস্ত বিদ্যুৎব্যবস্থা এখনো স্বাভাবিক হয়নি। বন্যার্তদের জন্য আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সরকারি দফতরের হিসাবে বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে ১ হাজার হেক্টর ইরি ধানসহ বাদাম ও সবজি খেত। কৃষক আধাপাকা ধান কাটতে বাধ্য হয়। সে ক্ষতি পুষিয়ে না উঠতেই দ্বিতীয় দফা বন্যায় বিভাগীয় শহরসহ সিলেটের ১৩ ও সুনামগঞ্জের ছয় উপজেলা প্লাবিত হয়। প্রতি বছরই উজানের ঢলে বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ এলাকা ডুবে যায়; যার ওপর হয়তো আমাদের তেমন হাত নেই। কিন্তু আমরা খাল-পুকুরগুলো উদ্ধার করে, নদীর নাব্য বাড়িয়ে বন্যার প্রকোপ ও মানুষের দুর্গতি কমাতে পারি। জরুরি ভিত্তিতে শুকনো খাবার, পানি ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর