শনিবার, ২৮ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার

স্বচ্ছতা-জবাবদিহি বাড়াতে হবে

ক্ষমতায় আসার আগে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী অঙ্গীকারগুলোর অন্যতম ছিল মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়া এবং স্বাস্থ্যসেবা সহজলভ্য ও মানসম্মত করা। এক দশকের বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকাকালে এ লক্ষ্যে বেশ কিছু কাজ হয়েছে। সরকারি স্বাস্থ্যসেবা ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত বিস্তৃত করা হয়েছে। কিন্তু স্বাস্থ্যসেবা সাধারণ মানুষের জন্য কতটুকু সহজলভ্য বা মানসম্মত হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েই গেছে। সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল নিয়ে গণমাধ্যমে নানা নেতিবাচক প্রতিবেদন প্রচার হয়। অনেক বেসরকারি হাসপাতাল চলছে কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া। অথচ বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার চালুর জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিবন্ধন বা ছাড়পত্র নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আবার কোনো প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন নিতে গেলেও হাজারটা ঝক্কি পোহাতে হয়। অনুমোদনহীন বিভিন্ন হাসপাতালের ভুল চিকিৎসা, অকারণ পরীক্ষা, পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্ট হয় নিয়মিত। অনিয়ম নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য অধিদফতর সব অনিবন্ধিত ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতাল বন্ধের নির্দেশনা জারি করেছে। তারা বলছে, নিবন্ধনহীন কোনো হাসপাতাল, ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টার চালু থাকলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী দেশে হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সংখ্যা ১৭ হাজার ২৪৪টি। বেসরকারি হাসপাতাল মালিক সমিতির নেতারা বলেছেন, নিবন্ধনের জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতর যেসব শর্ত দিয়েছে বিশেষ করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও অবকাঠামোগত যেসব শর্ত জুড়ে দিয়েছে, তা কোনো প্রতিষ্ঠানের পক্ষে পূরণ করা সম্ভব নয়। তবে উৎকোচ দিলে ঠিকই নিবন্ধন মেলে কিংবা নিবন্ধন ছাড়াই কার্যক্রম চালানো যায়। এ প্রক্রিয়া একটি ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে এবং স্বাস্থ্য খাতে তা-ই হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের দুর্নীতি, অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার দূর করা সম্ভব হলে অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর স্বচ্ছতা-জবাবদিহি বাড়ত। সব হাসপাতালকেই নিবন্ধনসংক্রান্ত আইন ও নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে। স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তিতে ব্যক্তির নিজস্ব ব্যয় কমানোর লক্ষ্যমাত্রা অর্জন থেকে আমরা এখনো অনেক পিছিয়ে আছি।

সর্বশেষ খবর