অসুস্থ হলে মানুষ যায় হাসপাতালে। কিন্তু সেই হাসপাতাল যদি অসুস্থতায় ভোগে তবে ভুক্তভোগীদের অসহায় হওয়ারই কথা। হৃদরোগ চিকিৎসায় বরিশাল বিভাগের পাঁচ জেলার হাজার হাজার মানুষের একমাত্র ভরসাস্থল বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। এ হাসপাতালের হৃদরোগ চিকিৎসার সিসিইউ বা করোনারি কেয়ার ইউনিটের অবস্থা এতই নাজুক যে হৃদরোগীদের চিকিৎসার আগে এটির সুচিকিৎসাও প্রয়োজন। বাইরের আলো-বাতাস ও শব্দ নিয়ন্ত্রণের জন্য চারদিকে বদ্ধ এ ওয়ার্ডের বেশির ভাগ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র বিকল। জ্যৈষ্ঠের তীব্র গরমে ওই ওয়ার্ডে হাঁসফাঁস অবস্থার সৃষ্টি হয়। ওয়ার্ডের এনজিওগ্রাম ইটিটি মেশিন ও ইকো মেশিনটিও দীর্ঘদিন অচল। যে কারণে সিসিইউ ওয়ার্ডে পরিপূর্ণ সেবা পাচ্ছেন না হৃদরোগীরা।
সিসিইউর টয়লেট-বাথরুমের অবস্থা আরও খারাপ। এ ওয়ার্ডের সেবিকাদের বিরুদ্ধে রোগী ও স্বজনদের সঙ্গে দুর্র্ব্যবহারের অভিযোগ ওপেন সিক্রেট। সিসিইউর যান্ত্রিক সমস্যার সমাধান হলে আরও কার্যকর সেবা প্রদান সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এসব সমস্যা সমাধানে ইতোমধ্যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এমন ভাষ্য হাসপাতাল পরিচালকের। দক্ষিণাঞ্চলের অভিজাত এ হাসপাতালটির হৃদরোগ চিকিৎসায় অব্যবস্থা চলছে কয়েক বছর ধরে। হৃদরোগীদের চিকিৎসায় অতি প্রয়োজনীয় এনজিওগ্রাম ও ইটিটি মেশিন বন্ধ রয়েছে আড়াই
বছর ধরে। ইকো মেশিন বিকল রয়েছে দেড় বছর। ফলে শেরেবাংলায় হৃদরোগের চিকিৎসা কার্যত প্রহসনে পরিণত হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, সারা দেশেই হাসপাতালের মেশিনগুলোর আয়ু কমে যায় এর সঙ্গে জড়িতদের কারসাজিতে। বাইরের ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যাতে রোগীরা যেতে বাধ্য হয়, তা নিশ্চিত করতেই চলে মেশিন বন্ধ ও নষ্ট করার অপখেলা। যে বিষয়ে যথাযথ তদন্ত জরুরি।